সরকারের ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ এমপি বলেছেন, “স্বপ্নের সোনার বাংলা নির্মাণে বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করতে হবে। আর স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করতে হলে স্মার্ট নাগরিকের পাশাপাশি স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনা অবশ্যই প্রয়োজন।”
আজ ১২ জুন বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম হলে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় ও জেলা প্রশাসন কর্তৃক ভূমিসেবা সপ্তাহ-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশঃ স্মার্ট ভূমিসেবা ও ভূমি ব্যবস্থাপনা প্রেক্ষিত’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় ভূমিসেবা সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন এবং ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে চেক বিতরণ করেন মন্ত্রী। এছাড়াও মহানগরে ভূমিসেবা প্রদানকারী বিভিন্ন সার্কেল ভূমি অফিসের মধ্যে চাঁন্দগাঁও সার্কেল-১ম, মহানগর সদর সার্কেল-২য় ও পতেঙ্গা সার্কেল-৩য় স্থান অর্জনকারী কর্মকর্তাদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন ভূমি মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ভূমি সপ্তাহ উদযাপনের পরেও সারাবছর অফিসে ভূমিসেবা বিষয়ক কর্মকান্ড চালিয়ে যাওয়া জরুরি। একদম জেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত সব জায়গায় ভূমি সংক্রান্ত সকল বিষয় হাতে কলমে শেখানো হবে। অনলাইনের মাধ্যমে একজন গ্রাহক যাতে ঘরে বসে ভূমিসেবা নিতে পারে সেজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
এসিল্যান্ড অফিসারদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, তারা যেন তাদের অফিসে যাওয়া প্রত্যেক নাগরিকদের সম্মান দিয়ে কথা বলেন। তাদের সমস্যাগুলো মনোযোগ সহকারে শুনে কিভাবে তা সমাধান করা যায় সে ব্যাপারে পরামর্শ দিবেন এবং আপনারা জনগণের কাছে স্মার্ট ভ‚মিসেবার বিষয়টি ভালো করে বুঝিয়ে বলবেন। ফলে অদূর ভবিষ্যতে ভ‚মি সংক্রান্ত মামলা মোকদ্দমা একেবারে কমে যাবে। জনগণকে খুব প্রয়োজন ছাড়া ভ‚মি অফিসে যেতে হবে না। তারা ঘরে বসেই সকল সেবা অনলাইনের মাধ্যমে পেতে পারে।
ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ বলেন, চট্টগ্রাম বাণিজ্যিক রাজধানী। এ সুন্দর চট্টগ্রামকে আরও সুন্দর করে সাজাতে চাই। আপনাদের সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। তিনি বলেছেন, দেশে একজন মানুষও ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না। তিনি কথা রেখেছেন, চট্টগ্রামকে ভূমিহীন ও গৃহহীন ঘোষণা করা হচ্ছে।
নদী, পুকুর ও জলাশয় সংরক্ষণের বিষয়ে কঠোর বার্তা দেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, নদী সংরক্ষণ করতে হবে। কোনভাবেই নদী বা নদীর আশপাশ ভরাট করা যাবে না। আমরা এসব বিষয় তীক্ষ্ণ সৃষ্টিতে দেখছি৷ আমাদের পুকুর ও জলাশয় সংরক্ষণ করতে হবে। কৃষি জমির শ্রেণী কোনভাবেই পরিবর্তন করা যাবে না। ফসলি জমি ও কৃষি জমির শ্রেণী পরিবর্তন কঠোরভাবে রোধ করতে হবে। যেভাবে কৃষি জমি চলে যাচ্ছে, ৫০ থেকে ৭০ বছর পর আর কোনও কৃষি জমি থাকবে না। তাই আমাদের সজাগ হতে হবে। কোনভাবেই যাতে মাটি ভরাট করে কৃষি ও ফসলি জমি নষ্ট করা না হয়।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র সহকারী কমিশনার রাজীব হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বিভাগীয় কমিশনার মোঃ তোফায়েল ইসলাম, ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) এমদাদুল হক চৌধুরী, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আ স ম মাহতাব উদ্দিন ও অতিরিক্ত ডিআইজি প্রবীর কুমার রায়। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বোয়ালখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুসরাত ফাতেমা চৌধুরী। বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তা, বিভিন্ন উপজেলা ও মহানগরীর সহকারী কমিশনার (ভূমি), ভূমি সহকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীর পাশাপাশি অসংখ্য ভূমি সেবাগ্রহীতা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।