আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র হবে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত : মেয়র ডা. শাহাদাত

নগরীর পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্রে রূপান্তর করতে চান চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এ লক্ষ্যে নেয়া পরিকল্পনাগুলো আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে সম্পন্নের ঘোষণা দিয়েছেন মেয়র ডা. শাহাদাত।
বুধবার পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে ট্যুরিস্টদের বিনোদন সুবিধা বাড়াতে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করেন মেয়র। এদিন বীচের ১০টি স্পটে বর্জ্যের বিন স্থাপন এবং সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করেন মেয়র। এছাড়া নারী ট্যুরিস্টদের জন্য টয়লেট নির্মাণের এবং বীচ আলোকায়নের ঘোষণা দেন তিনি।
মেয়র বলেন, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতকে আন্তর্জাতিক মানের ট্যুরিস্ট স্পটে রূপান্তর করতে কাজ করছি৷ পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত পরিস্কার রাখতে আমরা ১০টি স্পটে বর্জ্যের বিন স্থাপন করেছি, যাতে ময়লা-আবর্জনা যেখানে-সেখানে না পড়ে এবং এলাকার সৌন্দর্য অক্ষুন্ন থাকে। ধারাবাহিকভাবে পুরো সৈকত এলাকাকে পরিচ্ছন্ন রাখতে বিন স্থাপন করা হবে। এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি গণসচেতনতা কার্যক্রমও আয়োজন করেছি।
“বিচ এলাকাটি আগে সন্ধ্যার পরে অন্ধকার হয়ে যেত। আমরা সেই সমস্যা সমাধানে লাইটিং ব্যবস্থা উন্নত করেছি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা এই নতুন লাইটিং সুবিধা চালু করব। এছাড়া, মহিলাদের জন্য টয়লেট সুবিধা চালু করা হচ্ছে, যা আগে এখানে ছিল না। পর্যটকদের আরামদায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করতে আমরা গ্রিন প্লান্টেশন বা বনায়ন ও সবুজায়ন এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করছি। বসার জায়গাগুলো রঙিন করা হয়েছে, যাতে এগুলো আরও দৃষ্টিনন্দন হয়।”
মেয়র বলেন, আমাদের লক্ষ্য হলো এই এলাকাটিকে আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে আন্তর্জাতিক মানের একটি বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা। এখানে পার্কিং এরিয়া, রেস্টুরেন্ট, ও বিভিন্ন রিসোর্ট থাকবে। এটি স্থানীয় জনগণের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং একটি পরিবেশবান্ধব ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করবে। তবে নিরাপত্তার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
“আমি সবাইকে অনুরোধ করছি, যেন বিন-লাইটসহ চসিক থেকে যেসব সুবিধা দেয়া হবে সেগুলো যেন রক্ষা করা হয়। লাইট ও অন্যান্য জিনিস যাতে চুরি না হয়, সেজন্য টুরিস্ট পুলিশ ও সিকিউরিটি সার্বক্ষণিক কাজ করছে। আমরা পতেঙ্গা এলাকায় একটি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু করেছি, যা দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সহায়ক হবে। আমাদের এই উদ্যোগগুলোকে সাফল্যমণ্ডিত করতে সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। আমি আপনাদের সহযোগিতা কামনা করছি, যাতে আমরা সবাই মিলে চট্টগ্রামকে পরিচ্ছন্ন, সবুজ, এবং বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে পারি।”
এরপর ৪১নং দক্ষিণ পতেঙ্গা ওয়ার্ডস্থ বিএনআরআরবি সামনে বুধবার ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডাঃ শাহাদাত হোসেন। বিমানবন্দর সড়কের পাশে ১৫ নম্বর গুপ্তখালের অদূরে বিআরআরবি’র পাশে এ ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে স্টিলের ফুটওভার ব্রিজটির দৈর্ঘ্য হবে ২০ থেকে ২১ মিটার। ফুটওভার ব্রিজটিতে ওঠানামার জন্য চারটি সিঁড়ি থাকবে।
এসময় মেয়র ডা. শাহাদাত বলেন, এ সড়কে ট্রাক-লরিসহ বিভিন্ন ভারী গাড়ি ও দ্রুত যানবাহনগুলো চলাচল করে। সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমিয়ে নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়তে এ ফুটওভার ব্রীজ নির্মাণ করা হচ্ছে। পুরো নগরীতে ৩৮টি ফুট ওভার ব্রিজ নির্মাণ করার লক্ষ্যে কাজ চলছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন লেফটেন্যান্ট কমান্ডার শাহ আলম, প্রকল্প পরিচালক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আনিসুর রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম, সাবেক কাউন্সিলর ডাক্তার নুরুল আবছার, ডক ইয়ার্ড ইঞ্জিনিয়ার শাহিনুর রহমান সেলিম, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম মাহি, প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব শর্মা, মেয়রের একান্ত সহকারি মারুফুল ইসলাম, মোহাম্মদ আবু তৈয়বসহ বিএনপি এবং বিএনপির সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। পরিচ্ছন্ন কার্যক্রমে সহযোগিতা করে ‘ক্লিন বাংলাদেশ’’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।