চট্টগ্রামে বসবাসরত নাগরিকদের জীবনমানের উন্নয়নে আবাসিক সোসাইটিগুলোর নেতৃস্থানীয়দের ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
বৃহস্পতিবার পাঁচলাইশ আবাসিক কল্যাণ সোসাইটির উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সোসাইটির সভাপতি মাকসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে আরো উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিম, সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ সেলিম, এ কে এম সাঈদুল ইসলাম, নেজাম উদ্দিন, হারুনুর রশিদ, নজরুল ইসলাম, সৈয়দ নাসিম, খোরশেদুল আলম, সৈয়দ নাজির আহমেদ ,নজরুল আজাদ প্রমুখ।
এসময় মেয়র বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণ, আবাসিক এলাকাগুলোকে পরিচ্ছন্ন রাখাসহ বিভিন্নভাবে নগরবাসীর উন্নয়নে আবাসিক সোসাইটি গুলোর নেতৃস্থানীয়রা ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারেন। চট্টগ্রাম শহরকে আধুনিক, পরিচ্ছন্ন ও বাসযোগ্য নগরীতে রূপান্তর করতে নগরবাসীর সক্রিয় সহযোগিতা এবং আবাসিক সোসাইটিগুলোর কার্যকর ভূমিকা অপরিহার্য।
“নগরীর মশা নিয়ন্ত্রণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিচ্ছন্নতা এবং সড়ক উন্নয়নে সিটি কর্পোরেশনের পাশাপাশি আপনাদের মতো সোসাইটিগুলোর উদ্যোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি নাগরিক যদি তার নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করেন, তবে আমরা একটি সুস্থ, সুন্দর ও উন্নত নগর গড়ে তুলতে সক্ষম হব।”
মেয়র আরও বলেন, “আবাসিক এলাকাগুলোকে পরিচ্ছন্ন ও নিরাপদ রাখতে সোসাইটিগুলোর উদ্যোগ যেমন প্রয়োজন, তেমনি নাগরিক সচেতনতার বিকাশও জরুরি। গাছ লাগানো, আবর্জনা নির্ধারিত স্থানে ফেলা, পানির অপচয় বন্ধ করা এবং এলাকায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নিশ্চিত করা সবার দায়িত্ব। আবাসিক সোসাইটিগুলো এই উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা চট্টগ্রামের প্রত্যেক বাসিন্দাকে উন্নয়ন কর্মসূচিতে সরাসরি যুক্ত করতে চাই। আপনারা যদি সিটি কর্পোরেশনের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেন এবং নাগরিক সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা করেন, তবে উন্নয়ন কার্যক্রমগুলো আরও দ্রুত এবং কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন হবে। আবাসিক সোসাইটিগুলোর মাধ্যমে নাগরিকদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হতে পারে।”
মেয়র ডা. শাহাদাত উল্লেখ করেন, “আমাদের শহরের পরিবেশ সুরক্ষায় গাছ লাগানো এবং এলাকাভিত্তিক বর্জ্য পৃথকীকরণের ব্যবস্থা চালু করা জরুরি। স্কুল, খেলার মাঠ, পার্ক এবং কমিউনিটি সেন্টারগুলোর উন্নয়নে আবাসিক সোসাইটিগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষ করে, শিশুরা যেন একটি পরিচ্ছন্ন ও নিরাপদ পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারে, সেই বিষয়ে আমাদের সবার দায়িত্ব রয়েছে।”
সভায় উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে মেয়র বলেন, “আপনারা যদি সময়মতো পৌরকর পরিশোধ করেন এবং সিটি কর্পোরেশনের নিয়ম-নীতিগুলো মেনে চলেন, তবে আমাদের কাজ আরও সহজ হবে। আমি আপনাদের সহযোগিতা চাই, কারণ চট্টগ্রামের উন্নয়ন একা কোনো প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সম্ভব নয়। এটা আমরা সবাই মিলে করতে হবে।”
সভায় উপস্থিত বিভিন্ন আবাসিক সোসাইটির নেতৃবৃন্দ মেয়রের বক্তব্যের প্রশংসা করেন এবং নিজেদের উদ্যোগে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন। মেয়র আশাবাদ ব্যক্ত করেন, নাগরিক ও প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগে চট্টগ্রাম একটি ক্লিন, গ্রিন, হেলদি সিটি হিসেবে গড়ে উঠবে।