চট্টগ্রাম সিটিকরপোরেশনের মেয়র ডাঃ শাহাদত হোসেন বলেছেন চট্টগ্রাম শহরটি ৭০ লক্ষ জনগনের শহর। সেকারনে নগরের পরিস্কার পরিচ্ছনতা, প্লাস্টিক ও যানজটসহ সকল সমস্যা নিরসনে জনগন ও সিটিকরপোরেশনকে এক যোগে কাজ করতে হবে। ভোক্তাদের প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠান হিসাবে ক্যাব নাগরিক সমস্যাগুলো সমাধানে সদা সচেষ্ট আছে, সেজন্য ক্যাব নেতৃবৃন্দের প্রতি নগরবাসীর আস্থা ও প্রত্যাশা অনেক বেশি। তিনি ক্যাব এর ১৬ দফা দাবিকে সমর্থন করে এই প্রস্তাবনাগুলো বাস্তবায়নে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহায়তা ও সমর্থনের আশ্বাস দেন। ক্যাব ও সিটি করপোরেশন নাগরিক ভোগান্তি নিরসনে একযোগে কাজ করবে।
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ইং নগরীর টাইগারপাস্থ সিটিকরপোরেশন মিলনায়তনে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ(ক্যাব) চট্টগ্রাম নগর ও বিভাগীয় কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সিটি মেয়র ডাঃ শাহাদত হোসেন উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
মতবিনিময় সভায় ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইনের নেতৃত্বে অন্যান্যদের মধ্যে ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, মহানগর সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, বিভাগীয় সহ-সভাপতি সাংবাদিক এম নাসিরুল হক, মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস, মহানগরের যুগ্ন সম্পাদক মোঃ সেলিম জাহাঙ্গীর, আবু মোশারফ রাসেল, চান্দগাও থানা সভাপতি মোহাম্মদ জানে আলম, সাধারন সম্পাদক ইসমাইল ফারুকী, সদরঘাট থানা সভাপতি মোহাম্মদ শাহীন চৌধুরী, পাঁচলাাইশ থানা সভাপতি সায়মা হক, পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ড সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন কবির, আবদুল আওয়াল, হাটহাজারী উপজেলার লায়লা ইয়াছমিন, ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি আবু হানিফ নোমান, যুগ্ন সম্পাদক রাসেল উদ্দীন, প্রচার সম্পাদক ইমদাদুল ইসলাম, ক্যাব সদস্য এম এ হোসাইন, সাজ্জাদ উদ্দীন, ফয়সল আবদুল্লাহ আদনান, নাজিম উদ্দীন চৌধুরী অ্যানেল, ক্যাব জামালখানের হেলাল চৌধুরী, ক্যাব বোয়ালখালীর উপদেষ্ঠা নুর মোহাম্মদ চেয়ারম্যান, ক্যাব বায়েজিদের নাসিমা আলম, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিন জেলার সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক শাহনেওয়াজ আলী মির্জা, সাংবাদিক ওসমান জাহাঙ্গীর প্রমুখ এ উপলক্ষে উপস্থিত ছিলেন।
সিটি মেয়র ডাঃ শাহাদত বলেন, এই শহর শুধু মেয়র শাহাদাতের একার নয়, এটি আমাদের সবার। তাই এই শহরের সৌন্দয্য রক্ষায় সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। ক্যাব এর পক্ষ থেকে নগরীর ১৭টি বাজার পরিদর্শন করে আগামি ১ সপ্তাহের মধ্যে করনীয় বিষয়ে মেয়রের কাছে প্রতিবেদন পেশ, প্রতিটি বাজারের সার্বিক তথ্য মনিটরিং করে মেয়রের কাছে উপস্থাপনের জন্য অনুরোধ জানান। নগরীর ৪১ টি ওয়ার্ডে সিএলসিসি কমিটিতে ক্যাব এর ১জন সদস্যকে সদস্য করা হবে বলে ঘোষনা দেন।
ডাঃ শাহাদত আরও বলেন, পলিথিন ও প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে কঠোর সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার বিকল্প নাই। আর এরকারনে জলাবদ্ধাতা সৃষ্ঠি হচ্ছে। পাশাপাশি, নির্দিষ্ঠ বাজারের বাইরে ফুটপাতের হকার্স ও ভাসমান বিক্রেতাদের কারণে সৃষ্ট যানজট নিরসনে জনমত গড়ে তুলতে সিটিকরপোরেশনকে সহায়তা প্রদানের অনুরোধ করেন। তিনি স্থানীয় চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেবেন বলে আশ্বাস প্রদান করে জনগণের সেবায় নিজেকে নিবেদিত করার প্রত্যয় পুনরায় ব্যক্ত করেন। সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে সেবা পেতে ভোগান্তি পেলে সরাসরি মেয়রের নজরে আনার আহবান জানান।
সিটি মেয়র ডাঃ শাহাদত নালা-নর্দমা পরিষ্কার, অবৈধ স্থাপনা, হকার্স উচ্ছেদে সিটি করপোরেশন কাজ করছে এবং এ কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে বলে জানান। যে কোন অনৈতিক কাজ ও অন্যায়ের প্রতিবাদে সকলকে একযোগে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানিয়ে বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রতিরোধেই সমাজ থেকে অন্যায় ও অনিয়ম বন্ধ হবে। মানসম্মত শিক্ষার নিশ্চিতে একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষা ও খেলাধুলার প্রতি গুরুত্বারোপ করে প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে খেলার মাঠ নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করার আশ্বাস দেন।
আসন্ন পবিত্র মাহে রমজানে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে ব্যবসায়ী ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে যৌথভাবে সভা করে করনীয় নির্ধারন করা হবে বলে আশ্বাস দেন। একই সাথে নগরীর বাজারগুলির মনিটরিং এর তৎপরতা আরও জোরদার করা এবং ক্যাবকে এ কাজে আরও বেশি সম্পৃক্ত করা হবে বলে জানান।
হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ে রাজস্ব বিভাগের হয়রানি রোধে আপিল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। আপিল বোর্ড ও ভোক্তা অধিকার স্ট্যান্ডিং কমিটিতে ক্যাব প্রতিনিধি যুক্ত করা এবং নাগরিক ভোগান্তি রোধে ত্রিপাক্ষিক গণশুণানীর আয়োজনের বিষয়ে একমত হন।
আলোচনা শেষে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে ক্লিন, গ্রীণ ও হেলদি নগরীতে রূপান্তরে ক্যাব থেকে ১৬ দফা প্রস্তাবনা মেয়রের হাতে তুলে দেয়া হয়।