চিন্ময়কে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে খুলনায় বিক্ষোভ

বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে খুলনায় তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল করেছেন তার অনুসারীরা। সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাত পৌনে ৯টায় খুলনার পিকচার প্যালেস মোড় থেকে শুরু হওয়া এ বিক্ষোভে খুলনা মহানগর ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ এবং হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বিক্ষোভ মিছিলে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের খুলনা মহানগর শাখার সভাপতি বিরেন্দ্রনাথ ঘোষ, খুলনা মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রশান্ত কুন্ডু, সাধারণ সম্পাদক গোপাল সাহা ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিমান সাহা উপস্থিত ছিলেন।

খুলনা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিমান সাহা  বলেন, ‘আমাদের হিন্দু জাগরনী মঞ্চের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর তাকে কীভাবে কোথায় রাখা হয়েছে আমরা কেউ জানি না। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘চিন্ময় দাসকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বেলা ১১টায় নগরীর শিববাড়ি মোড়ে আমাদের গণজমায়েত ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশ থেকে আমাদের ডিসি অফিস ঘেরাও কর্মসূচি রয়েছে। আমরা অবিলম্বে আমাদের নেতা চিন্ময়কে মুক্ত দেখতে চাই।’

এর আগে আজ বিকেলে ঢাকা থেকে বিমানে চট্টগ্রাম যাওয়ার কথা ছিল চিন্ময়ের। সে সময় ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক। তিনি বলেন, ‘পুলিশের একটি অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ডিবি গ্রেপ্তার করেছে। যারা আবেদন করেছে, তাদের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হবে।’

উল্লেখ্য, গত ৩০ অক্টোবর চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। মো. ফিরোজ খান নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানায় মামলাটি করেন। জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে এ মামলা দায়ের হয়। মামলার পরই দুজনকে গ্রেপ্তার করেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারা হলেন- রাজেশ চৌধুরী ও হৃদয় দাশ।

মামলার আসামিরা হলেন- পুণ্ডরীক ধাম মন্দিরের অধ্যক্ষ চন্দন কুমার ধর প্রকাশ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী, চট্টগ্রামের হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক অজয় দত্ত (৩৪), নগরীর প্রবর্তক ইসকন মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলা রাজ দাশ ব্রহ্মচারী (৪৮), গোপাল দাশ টিপু (৩৮), ডা. কথক দাশ (৪০), প্রকৌশলী অমিত ধর (৩৮), রনি দাশ (৩৮), রাজীব দাশ (৩২), কৃষ্ণ কুমার দত্ত (৫২), জিকু চৌধুরী (৪০), নিউটন দে ববি (৩৮), তুষার চক্রবর্তী রাজীব (২৮), মিথুন দে (৩৫), রুপন ধর (৩৫), রিমন দত্ত (২৮), সুকান্ত দাশ (২৮), বিশ্বজিৎ গুপ্ত (৪২), রাজেশ চৌধুরী (২৮) এবং হৃদয় দাস (২৫)। একই মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

জানা যায়, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে তিনি চিন্ময় প্রভু নামে পরিচিত। এ ছাড়া তিনি পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ। সম্প্রতি বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট নামে দুটি সংগঠন ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের’ ব্যানারে কর্মসূচি পালন শুরু করে। নতুন এই জোটের মুখপাত্র করা হয় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে। কয়েক দিন আগে এই জোট আট দফা দাবিতে রংপুরে সমাবেশ করে।