বিশ্বের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ একটি মার্কিন পোশাক ব্র্যান্ডের মালিকের বিরুদ্ধে পতিতাবৃত্তি,যৌন নিপীড়ন এবং হয়রানির অভিযোগ আনা হয়েছে।
অ্যাবারক্রম্বি অ্যান্ড ফিচ পোশাক কোম্পানির সাবেক সিইও মাইক জেফ্রিসের বিরুদ্ধে তরুণ পুরুষ মডেলদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আনা হয়েছে।,মিডিয়া তদন্তের পর মার্কিন অ্যাটর্নি অফিস মডেলিংয়ের পেশাকে বেছে দেয়া যুবকদের প্রলোভন দিয়ে যৌন নিগ্রহের দায়ে জেফ্রিসহ আরো কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে৷
নিউ ইয়র্কের ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্টের ইউএস অ্যাটর্নি ব্রেয়ন পিস জানিয়েছেন যে শক্তিশালী লোকেরা ফ্যাশন এবং বিনোদনে ক্যারিয়ার গড়তে আগ্রহী তরুণদেরকে দীর্ঘদিন ধরে যৌন শোষণ আসছে।আসামীদের মধ্যে ৮০ বছর বয়সী জেফ্রিস ৬১ বছর বয়সী ম্যাথু স্মিথ এবং ৭১ বছর বয়সী জেমস জ্যাকবসন রয়েছে।
আসামীদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ২০০৮ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে একটি পতিতাকে পাচার এবং ১৫টি পতিতাবৃত্তির অভিযোগ আনা হয়েছে যার মধ্যে ১৫ জন অজ্ঞাত ভিকটিম জড়িত। জেফ্রিস এবং জ্যাকবসন ১০.৫ মিলিয়ন ডলার জামিনে মুক্তি পান। এসবের অভিযোগ প্রমাণিত হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে।
নিউইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো ২০১১ সালে কমপক্ষে ১১ জন মহিলাকে যৌন হয়রানি করার পরে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। ডেমোক্রেটিক পার্টির একটি স্বাধীন কমিটি তার বিরুদ্ধে যৌন অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে এবং তাকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে চাপ দিলে তিনি পদত্যাগে বাধ্য হন।
এর আগে বিশ্বের সিনেমা জগতের জনপ্রিয় প্রযোজক “হার্ভে ওয়েইনস্টেইন” কয়েক ডজন নারীকে যৌন হয়রানির জন্য তাকে ২৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল।
হার্ভে ওয়েইনস্টেইনের রায় ঘোষণা দেয়া হলে নারীদের যৌন হয়রানির কথা বিশ্বব্যাপী প্রকাশ হয়ে পড়ে এবং তখন #মিটু (বা আমাকে যৌন হয়রানি করা হয়েছে) নামে একটি বিশ্বব্যাপী আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল।
হার্ভে ওয়েইনস্টেইন অর্থের বিনিময়ে তার বেশিরভাগ অভিযুক্তদের সঙ্গে মিমাংসা করতে সক্ষম হলেও শেষ পর্যন্ত বাকি দুই মহিলাকে হয়রানির জন্য মোট ২৩ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছিল। জেফরি এপস্টেইন আরেকজন ধনী ব্যক্তি যিনি বিশ্বের বিখ্যাত ব্যক্তিদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার জন্য বিখ্যাত। এপস্টাইনের বিরুদ্ধে যৌনতার জন্য অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের একটি “বিস্তৃত নেটওয়ার্ক” চালানোর অভিযোগ ছিল।
জেফরি এপস্টাইনের “পেডোফাইল আইল্যান্ড (শিশু যৌন নির্যাতন)” দর্শকদের একটি তালিকা আগে প্রকাশিত হয়েছিল। এই দ্বীপটি “জেফ্রি এপস্টাইনের” মালিকানাধীন ছিল যেখানে নাবালিকারা ব্যাপক হারে ধর্ষণের শিকার হয়েছিল এবং ২০০ আমেরিকান সেলিব্রিটি এটি পরিদর্শন করেছিলেন। যদিও কিছু লোক বিশ্বাস করেন যে এই তালিকাটি জাল। জো বাইডেন, বারাক এবং মিশেল ওবামা, বিল এবং হিলারি ক্লিনটন, এমিনেম, লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও, শার্লিজ থেরন, বেন অ্যাফ্লেক, জিমি কিমেল, লেডি গাগা, বিল গেটস, মাইলি সাইরাস,ম্যাডোনাসহ আরো অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি এই তালিকায় রয়েছেন। তালিকায় যাদের নাম আদালতে পাওয়া যাচ্ছে তা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। “জেফরি এপস্টাইন” ২০১৯ সালের ১০ আগস্টে নিউইয়র্কের একটি কারাগারে তার সেলে আত্মহত্যা করেছিলেন।
স্বাধীনতার দাবিদার পশ্চিমা দেশগুলো ব্যক্তি ও যৌন স্বাধীনতাকে মানব উন্নয়নের ভিত্তি হিসেবে প্রচার করার চেষ্টা চালাচ্ছে কিন্তু অনেক পুঁজিবাদী এবং তাদের বিখ্যাত ব্যক্তিদের আচরণের মাধ্যমে তাদের নৈতিক ও চারিত্রিক অবক্ষয়ের চিত্র ফুটে উঠছে।
পার্সটুডে