এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে ৯টি সাধারণ ও মাদ্রাসা এবং কারিগরি বোর্ড মিলিয়ে ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৭৭.৭৮ শতাংশ। গত বছর ১১টি বোর্ডে গড় পাসের হার ছিল ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে স্ব-স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ওয়েবসাইটে একযোগে এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
এতে দেখা যায়, এবার ১১টি বোর্ডের গড় পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। আর ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৭৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ। এর মধ্যে ঢাকা বোর্ডে ৭৯ দশমিক ২১, রাজশাহী বোর্ডে ৮১ দশমিক ২৪, কুমিল্লা বোর্ডে ৭১ দশমিক ১৫, যশোর বোর্ডে ৬৪ দশমিক ২৯, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৭০ দশমিক ৩২, বরিশাল বোর্ডে ৮১ দশমিক ৮৫, সিলেট বোর্ডে ৮৫ দশমিক ৩৯, দিনাজপুর বোর্ডে ৭৭ দশমিক ৫৬, ময়মনসিংহ বোর্ডে ৬৩ দশমিক ২২, মাদ্রাসা বোর্ডে ৯৩ দশমিক ৪০ এবং কারিগরি বোর্ডে ৮৮ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস কেরছেন।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাসের হার মাদ্রাসা বোর্ডে এবং সবচেয়ে কম ময়মনসিংহ বোর্ডে।
এবার জিপিএ-৫ পেয়েছেন এক লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন। আর ২০২৩ সালে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ৯২ হাজার ৩৬৫ জন শিক্ষার্থী। সেই হিসাবে এবার জিপিএ-৫ পাওয়ার সংখ্যা বেড়েছে ৫৩ হাজার ৫৪৬ জন।
এছাড়া এবার দেশের ৬৫টি কলেজ থেকে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া কোনো শিক্ষার্থী পাস করেননি। গত বছর শূন্যপাস করা কলেজের সংখ্যা ছিল ৪২টি। সেই হিসাবে এবার শূন্য পাস কলেজের সংখ্যা ২৩টি বেড়েছে।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এগিয়ে ছাত্রীরা:
উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৭০ দশমিক ৩২ শতাংশ। যা সর্বশেষ গত ৫ বছর পাসের হারের মধ্যে সর্বনিম্ন।
এই সময়ে ক্রমান্বয়ে প্রতিবছর (২০২০ থেকে চলতি বছর পর্যন্ত) এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের হার কমলেও গত বছরের তুলনায় এবার জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি। তবে তার আগের তিন বছর (২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত) জিপিএ ৫ প্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বেশি ছিল।
এ ছাড়া এই শিক্ষা বোর্ডে এবারও ছাত্রদের চেয়ে ছাত্রীরা পাসের হার ও জিপিএ ৫ প্রাপ্তিতে এগিয়ে আছে।
প্রকাশিত ফলাফল পর্যালোচনায় দেখা যায়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চট্টগ্রামে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ৭০ দশমিক ৩২ শতাংশ। যা গতবার (২০২৩) ছিল ৭৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ। এর আগে যথাক্রমে ২০২২ সালে ৮০ দশমিক ৫০ শতাংশ; ২০২১ সালে ৮৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ এবং ২০২০ সালে ১০০ শতাংশ (করোনার কারণে পরীক্ষা না হওয়ায় অটোপাস)।
এ ছাড়া এবার জিপিএ ৫ পেয়েছে ১০ হাজার ২৬৯ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ৫৭৫৯ জন এবং ছাত্র ৪৫১০ জন। আর ২০২৩ সালে জিপিএ ৫ পেয়েছিল ছয় হাজার ৩৩৯ জন। এর আগের তিন বছর জিপিএ ৫ বেশি ছিল। এর মধ্যে ২০২২ সালে ১২ হাজার ৬৭০ জন, ২০২১ সালে ১৩ হাজার ৭২০ জন এবং ২০২০ সালে ১২ হাজার ১৪৩ জন ছাত্রছাত্রী জিপিএ ৫ পেয়েছিল।
প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে ২৮২টি কলেজের মোট পরীক্ষার্থী ছিল এক লাখ ছয় হাজার ২৯৮ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেন এক লাখ পাঁচ হাজার ৪১৬ জন। তাদের মধ্যে পাস করেছেন ৭৪ হাজার ১২৫ জন। যা গতবারের তুলনায় এবার পাসের হার ৪ দশমিক ১৩ শতাংশ কম। তিনটি শাখার মধ্যে পাসের হার বিজ্ঞানে ৯১ দশমিক ৩৩ শতাংশ, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৭৩ দশমিক ৫২ শতাংশ এবং মানবিক বিভাগে ৫৭ দশমিক ১১ শতাংশ।
এবার ছাত্র পাসের হার ৬৭ দশমিক ৭২ শতাংশ। ছাত্রী পাসের হার ৭২ দশমিক ৪৯ শতাংশ। ছাত্রদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে চার হাজার ৫১০ জন। ছাত্রীদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে পাঁচ হাজার ৭৫৯ জন। এই হিসাবে এবারও ছাত্রদের চেয়ে ছাত্রীরা পাসের হার ও জিপিএ ৫ প্রাপ্তির সংখ্যা- দুই দিক থেকেই এগিয়ে।