প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে বলেন, রাষ্ট্র নাগরিকদের কাছে ট্যাক্স চায় আর নাগরিকরা রাষ্ট্রের কাছে নিরাপত্তা চায়। নিরাপত্তা দেওয়া রাষ্ট্রের একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যদি স্বাভাবিক থাকে এটা সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট।
রোববার (৬ অক্টোবর) বিকেলে ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের ভাষাশহীদ আব্দুল জব্বার মিলনায়তনে বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, আমি মনে করি, যখন কোনো ঘটনা ঘটে তখন যদি তাৎক্ষণিক প্রতিকার পাওয়া যায় তাহলে অন্য একটা ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা কম থাকে। এই মনোভাব নিয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজ করতে অনুরোধ জানান তিনি।
তিনি বলেন, এখন আমাদের দেশে বন্যা হচ্ছে। এটা একটা ফ্ল্যাশ ফ্ল্যাড। আমাদের প্রাকৃতিক পরিবর্তন যেভাবে হচ্ছে সেটার জন্য শুধু আমরাই ভুক্তভোগী না, বিভিন্ন দেশেও এমন ঘটনা ঘটে। অনাবৃষ্টি বা অতিবৃষ্টি হচ্ছে। ফলে আমাদের এগুলো নিয়েই বসবাস করতে হবে। এগুলোকে মোকাবিলার চেষ্টা করা, প্রস্তুতি রাখা এবং পরিবেশগত পরিবর্তনকে আমরা যেভাবে মোকাবিলা করতে পারি সে লক্ষ্যে কাজ করা। এ বিষয়ে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমাদের ত্রাণের কোনো ঘাটতি নেই। যখন যা লাগবে তারা দিতে পারবে।
ডা. বিধান রঞ্জন রায় গর্ব করে বলেন, আমাদের ময়মনসিংহ অঞ্চল তুলনামূলকভাবে শান্ত অঞ্চল। এখানে হানাহানি অন্য কোনো অঞ্চল থেকে কম হয়। বিগত আন্দোলনে এখানে যারা কর্মরত ছিলেন এ বিষয়টাকে সুন্দরভাবে ম্যানেজ করেছেন। তাই এখানে বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। শুধু কর্মকর্তারা নন নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক নেতারা সবার মাঝে একটা বোঝাপড়া আছে- সেজন্য এখানে হানাহানি কম হয়। এই অঞ্চলটাকে শান্ত রাখার জন্য যেসব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নাগরিক রয়েছেন তাদের মধ্যে এক ধরনের সমঝোতা নিয়ে কাজ করতে পারলে ভালো।
উপদেষ্টা আরও বলেন, মানুষ তাদের জীবন দিয়েছেন স্বৈরাচারী ব্যবস্থা পরিবর্তনের জন্য। এখন আমাদের আচরণে পরিবর্তন না আনলে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের আত্মত্যাগ বৃথা যাবে। তাদের কাছে আমরা ঋণী থেকে যাব। আমি আশা করি আপনারা যে যার স্থানে আছেন তিনি তার কর্তব্যটুকু সম্পন্ন করবেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে যে পরিবর্তন ঘটল, ৫ থেকে ৮ আগস্ট কোনো সরকার ছিল না। কিন্তু আমাদের দেশে কোনো কাজ থেমে থাকেনি। এটা আপনাদের জন্য সম্ভব হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো এমন একটা সক্ষমতা অর্জন করেছে যে, একটা সরকারের অনুপস্থিতিতেও তারা কাজ চালিয়ে নিতে পারে। এজন্য আপনাদের অভিনন্দন জানাই।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদ, ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজি ড. আশরাফুর রহমান, জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম, র্যাব-১৪ সিইও অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আলিমুজ্জামান, পুলিশ সুপার মো. আজিজুল ইসলাম, বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইসমাইল হোসেন, আনসার ও ভিডিপির অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আব্দুল আউয়ালসহ বিভাগ ও জেলা পর্যায়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।