ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, “আমরা সংগ্রামের মাধ্যমে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছি। এখন জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী দেশের ভবিষ্যৎকে গড়ে তুলতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।”
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ঝিনাইদহের পায়রা চত্ত্বরে জেলা বিএনপি আয়োজিক এক গণসমাবেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, “স্বাভাবিকভাবেই এই সরকার বাংলাদেশের সকল মানুষের সমর্থনে দায়িত্ব নিয়েছে। তাদের প্রতি সেদিনও আমাদের সমর্থন ছিল, আজও আছে। তবে এখানে একটি কিন্তু রয়েছে। তাদের প্রতি আমাদের আস্থাকে প্রশ্নহীন রাখা চ্যালেঞ্জ কিন্তু তাদেরই নিতে হবে। বর্তমানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতি অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের জন্য রোড ম্যাপ প্রয়োজন, সেটা নির্দিষ্ট করতে হবে তাদেরই।”
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বিএনপির সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, “বাস্তবতা বিবেচনায় আমাদের বুঝতে হবে সব পরিবর্তন সাধান তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তেমনি এমন দায়িত্ব তাদের নেওয়া উচিত হবে না যেটা তারা বহন করতে সক্ষম নয়। তারপরও তাদের প্রতি সেদিনের মতো আজও সমর্থন আছে। তাদের দায়িত্ব যেন তারা সঠিকভাবে পালন করতে পারেন সেই রকম সমর্থন অব্যাহত থাকবে।”
স্বৈরাচারের দোসররা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “স্বৈরাচারের ফেলে যাওয়া প্রশাসনের ষড়যন্ত্র কিন্তু আমরা দেখতে পাই। বর্তমান সরকার মাঝে মাঝেই অসহায় বোধ করছেন। এর অবসান যদি না হয়, তাহলে দেখা যাবে একটা সময় ছোট ছোট বিপর্যয়গুলো বড় আকার ধারণ করবে। স্বাভাবিকভাবেই তখন প্রতিকারের পথ হয়ে যাবে সংকীর্ণ।”
নির্বাচিত সরকার ছাড়া দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে না বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “সমাজের সকল মানুষ বিশেষ করে যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন, মানুষের অধিকারে বিশ্বাস করেন, তারা সকলে বুঝতে সক্ষম; বৈদেশিক বিনিয়োগ, আন্তর্জাতিক বিশ্বের আস্থা, রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা, ব্যবসা-বাণিজ্যে স্বস্তি, জনগণের নিরাপত্তা, দেশ ও জনগণের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা; এই সব কিছু দিতে পারে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার। আমাদের যদি এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হয় তাহলে নির্বাচিত সরকারের বিকল্প নেই।”
তারেক রহমান বলেন, “আগস্টের যে মহাবিপ্লব তা আমাদের সামনে স্বাধীনতা ও বিজয়ের বার্তা নিয়ে এসেছে। স্বৈরাচার পতনের এই আন্দোলনের সফলতা অবদান দেশের সর্বস্তরের মানুষ; রাজনৈতিক দল, ছাত্র জনতা, কৃষক-শ্রমিক সকলের। যদি আমরা এদের মর্যাদা দিতে ব্যার্থ হই কিংবা ১৭ বছর ধরে অবিরাম আন্দোলনে গুম খুন নির্যাতনে পিষ্ট মানুষের সম্মান দিতে ব্যার্থ হই তাহলে ইতিহাস কিন্তু আমাদের কাউকে ক্ষমা করবে না। এই বিষয়গুলো আমাদের বিবেচনায় রাখতে হবে।”
তিনি বলেন, “আসুন আজ আমরা সবাই মিলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই। গত ১৭ বছর বিশেষ করে জুলাই এবং আগস্ট মাসে যে মানুষগুলো আত্মত্যাগ করেছে, স্বৈরাচারের পতনে জীবন বাজি রেখেছিল। তাদের এই আত্মত্যাগ সেদিনই সফলতা অর্জন করবে যেদিন এই দেশের মানুষ রাজনৈতিক ভাবে তাদের অধিকার ফিরে পাবে।”
ঝিনাইদহ জেলা বিএনপি’র সভাপতি এডভোকেট এম এ মজিদের সভাপতিত্বে গণসমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অমিত ইসলাম অমিত, বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, বিএনপির সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আমীরুজ্জান খাঁন শিমুল প্রমুখ।