সাভারে সুফি সাধক কাজী জাবের আহমেদের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় হামলাকারীরা ওই বাড়িতে থাকা একটি মাজার ভাঙচুরের চেষ্টা করেন। হামলায় ২০ থেকে ২৫ জন আহত হন। এরমধ্যে গুরুতর আহত দুইজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সাভারের বনগাঁও ইউনিয়নের চাকুলিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী কাজী জাবের আহমেদ জানান, গত দুই মাস ধরে তার বাড়িতে হামলার পরিকল্পনা করছিলেন স্থানীয় পীর হিসেবে পরিচিত তৈয়বুর রহমান ও তার অনুসারীরা। রবিবার রাতে একটি মসজিদে জড়ো হয়ে তারা হামলার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর রাত সাড়ে ৯টার দিকে পাঁচ শতাধিক লোকজন লাঠিসোটা, রাম দাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার বাড়ির সামনে আসেন। এরপর তারা বাড়ি লক্ষ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। ইটপাটকেলের আঘাতে ওই বাড়িতে অবস্থানরত পরিবারের সদস্য ও ভক্তসহ অন্তত ২৫-৩০ জন আহত হন। এরমধ্যে দুইজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কাজী জাবের আহমেদ বলেন, “রাত ৯টা থেকে শুরু হওয়া হামলা চলতে থাকে মধ্যরাত পর্যন্ত। এ সময় হামলাকারীরা বাড়ি লক্ষ করে ইটপাটকেল ছুড়লে তাতে ঘড়ের আসবাবপত্র, জানালার কাঁচসহ বিভিন্ন জিনিসপত্রের ক্ষয়ক্ষতি হয়। এছাড়া অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দেওয়া হয় দুটি মোটরসাইকেল। এছাড়া বৈদ্যুতিক মিটার ও পানির পাম্পও ভাংচুর করা হয়।”
একপর্যায়ে হামলাকারীরা ওই বাড়িতে থাকা মাওলানা আফসার উদ্দিন বাবার মাজারে ভাঙচুরের চেষ্টা করে। রাত ১২টার দিকে সেনাবাহিনী ও সাভার মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী পরিবারটির এক সদস্য বলেন, “গত কিছু দিন ধরে আমাদেরকে ধর্ম বিরোধী, বিধর্মী এসব অপবাদ দিচ্ছিলেন স্থানীয় কিছু লোকজন। এসব অপবাদ দিয়ে চাকুলিয়ায় পীর হিসেবে পরিচিত তৈয়বুর রহমান ও তার অনুসারীরা আমাদের ওপর হামলা করে।”
তিনি বলেন, “জাবের ভাই জ্ঞানী মানুষ। তিনি গবেষণা করেন। তার কাছে ভক্তরা আসে। তৈয়বুর রহমান এটি মানতে পারছিলেন না বিধায় তারা মিটিং করে হামলা করে।”
তিনি আরও বলেন, “রাম দা, চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে বাসার লোহার গেট ভাংচুরের চেষ্টা করে হামলাকারীরা। আমরা তাদের প্রতিহত করি। হামলায় ২০-২৫ জন আহত হন। এরমধ্যে দুইজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলাকারীরা একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছে, পানির মোটর ও বৈদ্যুতিক মিটার ভাঙচুর করা হয়েছে। তবে মাজার ভাঙতে পারেনি।”
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুয়েল রানা বলেন, “বাড়ির বাইরে থেকে হামলাকারীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছেন। তবে বাড়ির ভেতরে ঢুকতে পারেনি। দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে সকলকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।”