চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুছ বলেছেন, চট্টগ্রামকে বাসোপযোগী এবং বিশ্বমানের পরিকল্পিত নগরী গড়ে তোলাই আমার প্রধান লক্ষ্য। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সিটি কর্পোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার সমন্বিত প্রচেষ্টা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে নয়, মানুষের কল্যাণে কাজ করার অ্যাসাইনমেন্টে আমাকে নিযুক্ত করেছেন। সেই গুরুদায়িত্ব আমি এবাদত হিসেবে গ্রহণ করেছি। চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের চোখে যা দেখবেন সেই বিষয়গুলো আমার কাজে অগ্রাধিকার পাবে।
মঙ্গলবার দুপুরে (৭ মে) প্রেস ক্লাবের পিএইচপি ভিআইপি লাউঞ্জে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি সালাহ্উদ্দিন মো. রেজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক।
মোহাম্মদ ইউনুছ আরো বলেন, জলাবদ্ধতা চট্টগ্রামের একটি প্রধান সমস্যা। চাক্তাই খালের মোহনা সম্প্রসারণ ছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসন হবে না। এই জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ওই সময় কর্ণফুলী নদীতে পিলার সেতুর পরিবর্তে ঝুলন্ত সেতু নির্মাণের জন্য সংগ্রাম করেছিলেন। কিন্তু তা না হওয়ায় এখনো চাক্তাই খালের মোহনায় পলি জমে থাকে। এই পলি সরাতে গেলে ব্রিজের ভিত দুর্বল হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
তিনি বলেন, সব বিষয়ে আমি অভিজ্ঞ নই। তবে জনমতের পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ কাজে লাগানোর চেষ্টা করবো। যেখানে একটি গাছ কাটা হবে সেখানে পঞ্চাশটি গাছ লাগাতে হবে। সিডিএ’কে দুর্নীতিমুক্ত করার পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি প্রয়োজনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দুর্ণীতিবাজদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। দুর্ণীতি করে কেউ আমার কাছে প্রশ্রয় পাবে না। সিডিএ হলো একটা স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানকে গতিশীল করতে আয়বর্ধক প্রকল্প গ্রহণের বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হবে। আগামীতে চট্টগ্রামে ছোট ছোট প্লট না দিয়ে সুউচ্চ ভবন নির্মাণ করে ফ্ল্যাট বরাদ্দের মাধ্যমে আবাসন সঙ্কট নিরসনের উদ্যোগ নেয়া হবে।
সভাপতির বক্তব্যে সালাহউদ্দিন মো. রেজা বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুছ একজন মাঠে-ময়দানের সৈনিক। জনগণের সাথে রয়েছে যাঁর নিবিড় সম্পর্ক। সিডিএ’র চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এই প্রথম তিনি চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে নিজের অভিব্যক্তি ব্যক্ত করেছেন। জবাব দিয়েছেন সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের। পরিকল্পিত জনবান্ধব নগরায়নে তিনি বিশেষ ভূমিকা রাখবেন বলে আমরা আশাবাদী।
স্বাগত বক্তব্যে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক বলেন, চট্টগ্রামের একজন প্রিয় মানুষ বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুছকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করে যথার্থ কাজ করেছেন। বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সাধারণ মানুষের হয়রানি রোধসহ নানা সেবামূলক কাজের মাধ্যমে নগরবাসীর হৃদয়ে স্থান লাভ করবেন-তা সকলের প্রত্যাশা।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক শহীদুল্লাহ শাহরিয়ারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি চৌধুরী ফরিদ, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনয়নের সভাপতি তপন চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক ম শামসুল ইসলাম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের কার্যকরী সদস্য জসীম চৌধুরী সবুজ, সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মোস্তাক আহমেদ, প্রবীণ সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি, ইসকান্দর আলী চৌধুরী, দৈনিক নয়া বাংলা সম্পাদক জেড এম এনায়েতউল্লাহ, প্রেস ক্লাবের সাবেক সহ-সভাপতি আসিফ সিরাজ এবং সিনিয়র সাংবাদিক মুহাম্মদ শামসুল হক ও নুরুল আলম। প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন প্রেস ক্লাবের সাংস্কৃতিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন হায়দার, চট্টগ্রাম সাংবাদিক হাউজিং সোসাইটির সাবেক চেয়ারম্যান স্বপন কুমার মল্লিক, যীশু রায় চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা দেবপ্রসাদ দাস দেবু, মুস্তফা নঈম, আলীউর রহমান, আলমগীর সবুজ, আরিচ আহমেদ শাহ, শাহনেওয়াজ রিটন এবং আরিফ রায়হান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মোহাম্মদ ইউনুছকে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সম্মাননা স্মারক প্রদান ও ফুলেল শুভেচ্ছা প্রদান করা হয়।
এ সময় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি মনজুর কাদের মনজু, অর্থ সম্পাদক রাশেদ মাহমুদ, ক্রীড়া সম্পাদক এম সরওয়ারুল আলম সোহেল, গ্রন্থাগার সম্পাদক কুতুব উদ্দিন, সমাজসেবা ও আপ্যায়ন সম্পাদক আল রাহমান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক খোরশেদুল আলম শামীম, কার্যকরী সদস্য মো. আইয়ুব আলী এবং প্রেস ক্লাবের স্থায়ী-অস্থায়ী সদস্যসহ বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।