আখেরি মোনাজাতে মুসলিম উম্মাহর সমৃদ্ধি ও নাজাত কামনা

 

আখেরি মোনাজাতে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি, সমৃদ্ধি ও নাজাত কামনা করে গতকাল রোববার বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের প্রথম ধাপ শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় দফার ইজতেমা আজ সোমবার শুরু হয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে মাওলানা সাদ অনুসারীদের ইজতেমা।

এর আগে শুক্রবার বাদ ফজর আমবয়ানে মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিশ্ব ইজতেমা। শুরায়ে নেজাম (মাওলানা জোবায়ের) অনুসারীদের এবারের বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুই ধাপে। গতকাল আখেরি মোনাজাত চলাকালে আমিন আমিন ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে টঙ্গীর তুরাগ তীর ও ইজতেমা ময়দানের আশপাশের এলাকা। মুসলিম উম্মাহর দ্বিতীয় বৃহত্তম এই জমায়েতে আখেরি মোনাজাত সকাল ৯টা ১১ মিনিটে আখেরি মোনাজাত শুরু হয়ে ৯টা ৩৫ টা মিনিটে শেষ হয়। আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন বাংলাদেশ তাবলীগ জামাতের শীর্ষ মুরুব্বী মাওলানা জুবায়ের আহমেদ। খবর বাসস/ বিডিনিউজের।

মোনাজাতে বিশ্বের মুসলমানদের হেদায়েত, ঐক্য, শান্তি, সমৃদ্ধি, ইহকাল ও পরকালের নাজাত এবং দ্বীনের দাওয়াত সর্বত্র পৌঁছে দেওয়ার জন্য দোয়া করা হয়। তাছাড়া সব ধরনের গুনাহ থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়। মোনাজাত শেষে ‘আমিন আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে টঙ্গীর তুরাগ তীর ও ইজতেমা ময়দানের আশপাশ। এর আগে বাদ ফজর ভারতের মাওলানা আব্দুর রহমান হেদায়তি বয়ান শুরু করেন, তা বাংলায় তরজমা করেন মাওলানা আব্দুল মতিন। যারা বিশ্ব ইজতেমা ময়দান থেকে জামাত গঠন করে দ্বীনের কাজে বের হবেন, তারা কী আমল করবেন এবং যারা মহল্লায় ফিরে যাবেন, তারা কী আমল করবেন তার দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেওয়া হয় এই বয়ানে। হেদায়তি বয়ানের পর ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা নসিহতমূলক বয়ান করেন, বয়ানটি তরজমা করেন মাওলানা জুবায়ের আহমেদ। মোনাজাতে অংশ নিতে রোববার ফজরের নামাজের পর থেকেই ইজতেমা ময়দানের দিকে রওনা দেন আশপাশ এলাকার মানুষ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মহাসড়কে তাদের স্রোত বাড়তে থাকে। ভোরের আলো ফোটার আগেই হাজার হাজার মানুষ ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কে নেমে আসেন। ভোগড়া বাইপাস থেকে ইজতেমা মাঠ পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটেই অতিক্রম করেন অসংখ্য মানুষ। কারণ বিপুল জনসমাগমের কারণে যানবাহনের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ে। মোনাজাতের আগেই ইজতেমা ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।

একপর্যায়ে ময়দানের আশপাশের অলিগলি, সড়ক, বাসাবাড়ি, কলকারখানার ছাদে, ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক, টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকার ফ্লাইওভারের উপরে, টঙ্গী–ঘোড়াশাল ও কামারপাড়া সড়কে অবস্থান নিয়ে মোনাজাতে অংশ নেন অসংখ্য মানুষ। তুরাগ নদে নৌকায় বসে এবং আশেপাশে যানবাহনের ছাদে বসেও মোনাজাতে অংশ নিতে দেখা যায় অনেককে। বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা শত শত নারী ইজতেমা ময়দানের আশপাশ, কলকারখানা ও বাসাবাড়ির ছাদসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন। ভারত, পাকিস্তান, সৌদি আরব, কাতার, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়া, চীনসহ বিভিন্ন দেশের তাবলিগ জামাতের ৩ হাজার ২০০ বিদেশি মেহমান এবারের ইজতেমায় অংশগ্রহণ করেন।