৩১ দফা বাস্তবায়নে নারী সমাজ অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে – আবু সুফিয়ান

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক আবু সুফিয়ান বলেছেন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার পতনে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান পর্যন্ত প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে পুরুষের পাশাপাশি এদেশের নারী সমাজের ভূমিকা অনস্বীকার্য। জুলাই অভ্যুত্থানে আমরা দেখেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম ছাত্রীদেরকে স্লোগান দিতে, তুমি কে, আমি কে রাজাকার! রাজাকার! কে বলেছে ? কে বলেছে ? স্বৈরাচার! স্বৈরাচার! পুলিশ যখন সাধারণ ছাত্রদের গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছিল ছাত্রীরা তখন পুলিশের গাড়ির সামনে গিয়ে ব্যারিকেড হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তীব্র আন্দোলনে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার জন্য রাজপথে পানি ও খাবার নিয়ে এগিয়ে এসে তাদের সাহস জুগিয়েছে এদেশের মা-বোনেরা। সন্তান ও ভাই কে নিয়ে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে রাজপথে নেমেছিল মা-বোনেরা। রক্তক্ষয়ী এই লড়াইয়ে পুরুষের সাথে কাধেঁ কাধঁ মিলিয়ে অভুতপূর্ব অংশগ্রহণের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট, খুনী সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে এদেশের নারী সমাজ। পৃথিবীর বুকে যত পরিবর্তন সাধিত হয়েছে, যত বিপ্লব হয়েছে প্রতিটি পরিবর্তন ও বিপ্লবে নারীর ভ‚মিকা অসামান্য। তাই আওয়ামী শাসক গোষ্ঠীর দুর্নীতি ও দু:শাসনে বিধ্বস্ত বাংলাদেশ কে মেরামতে দেশনায়ক তারেক রহমান ৩১দফার যে রুপরেখা দিয়েছেন তা বাস্তবায়নেও নারী সমাজ অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।

তিনি আরোও বলেন, যে কাঙ্খিত লক্ষ্য ও পরিবর্তনের আকাঙ্খা নিয়ে আমরা আন্দোলন করেছি তা এখনো পূর্ণ হয়নি। শুধুমাত্র একটি পরিবর্তন হয়েছে তা হলো ফ্যাসিস্ট সরকার তার দলবল নিয়ে পালিয়েছে। কিন্তু আমাদের আকাঙ্খা ছিল একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। মানুষের ভোটাধিকার ফিরে দেওয়া, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা, জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করা। স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও জনদুর্ভোগ এখনো কমেনি। দ্রব্যমূল্যের উধর্বগতির কারণে বাজার পরিস্থিতি সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। আয়ের সাথে ব্যয়ের সমন্বয় নেই। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিন দিন চরম অবনতি ঘটছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় নেই, কিন্তু তাদের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত থেমে নেই। সমাজের প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে আওয়ামী লীগের লোকগুলো আছে। তাদের দোসররাও আছে। তাই অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত দ্রæত নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। কারণ জনগণের আশা আকাঙ্খার বাস্তবায়ন করতে হলে জনগণের নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দেশের যে সংস্কার প্রয়োজন তা জনগণকে সাথে নিয়ে নির্বাচিত সরকার বাস্তবায়িত করবে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হলে চ‚ড়ান্ত বিজয় অর্জিত হবে। দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন ফিরে আসবে।

০৫ জানুয়ারী (শনিবার) বিকেলে বহদ্দারহাট এক কিলোমিটার ভিআইপি ল্যান্ড কমিউনিটি সেন্টারে জাতীয়তাবাদী নারী অধিকার ফোরাম চান্দগাঁও থানা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত ‘নারী সমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এতে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেন লিপু। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির সাবেক মৎস বিষয়ক সম্পাদক মো. বকতেয়ার, চান্দগাঁও থানা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন ভুইয়া, জসিম উদ্দিন। নারী সংগঠক শিরিন জাহান শিরিন এর সভাপতিত্বে এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গোলজার হোসেন, এম. আবু বক্কর রাজু, মো. আলমগীর, মো. আলম, নুরনবী, সাইদুল ইসলাম, মো. হোসেন মাসুম, নারী নেত্রী পারভীন আক্তার, ফরিদা বেগম, মোছাম্মৎ মুক্তা, সাবরিনা আক্তার, রশিদা খানম, দিলসাত বেগম, রুবিনা আক্তার, জাহেদা বেগম, রোকেয়া হক, শহীদুল ইসলাম, জালাল উদ্দিন, রহিম উদ্দিন, সোলায়মান, নাঈম, সাফায়েত হোসেন সোহান প্রমুখ।