আগামীর বাংলাদেশ হবে ন্যায়-ইনসাফের বাংলাদেশ -হামিদুর রহমান আজাদ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি এ.এইচ.এম হামিদুর রহমান আজাদ বলেছেন, চট্টগ্রাম ভৌগোলিক, বাণিজ্যিক এবং আরো বিভিন্ন কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জামায়াত এদেশকে কোরআন সুন্নাহর ভিত্তিতে পরিচালিত করতে চায়। দেশে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চায়। দেশকে নেতৃত্ব দেয়া মানে একটা জবাবদিহিতার মুখোমুখি হওয়া। সমাজ ও রাষ্ট্রকে ইসলামাইজেশন তথা কুরআন সুন্নাহর আলোকে গড়ে তুলতে হবে। আগামীর বাংলাদেশ হবে ন্যায়-ইনসাফের বাংলাদেশ ইনশাআল্লাহ।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজারস্থ কিশলয় কার্যালয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর বার্ষিক পরিকল্পনা ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, সংসদীয় দলের সাবেক হুইপ, চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর ও সাবেক এমপি আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় প্রোগ্রামে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও নির্বাহী পরিষদ সদস্য মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান। এতে দারসূল কুরআন পেশ করেন আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের সাবেক প্রো-ভিসি ড. আবু বকর রফিক আহমদ।

এতে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরী নায়েবে আমীর মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা খায়রুল বাশার, মুহাম্মদ উল্লাহ, ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুস ও মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী, মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য আবু হেনা মোস্তফা কামাল, মুহাম্মদ আবু বকর ছিদ্দিক, ডা. সিদ্দিকুর রহমান, মাওলানা মমতাজুর রহমান, প্রফেসর মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ, হামেদ হাসান ইলাহী প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ.এইচ.এম হামিদুর রহমান আজাদ আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী এমন এক বৈষম্যহীন ও ইনসাফপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চায় যে সমাজে কেউ না খেয়ে থাকবে, আর কেউ অবৈধভাবে সম্পদ গড়ে বিদেশে পাচারের মাধ্যমে অর্থবিত্তের পাহাড় জমাবে এমন হবে না। আর কুরআন-সুন্নাহর আইনের মাধ্যমে এমন শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। তিনি ক্ষুধা, দারিদ্র ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালানোর আহবান জানান।

তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী একটি আদর্শিক ও গণমুখী রাজনৈতিক সংগঠন। সমাজসেবা ও মানবসেবার মাধ্যমে জামায়াত ইতোমধ্যে দেশের মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে। সমাজ সংস্কারের জন্য গণভিত্তির প্রয়োজন। ব্যাপক ও গণমুখী দাওয়াতী কাজের মাধ্যমে জামায়াত সেই গণভিত্তি রচনা করতে চায়। জামায়াত একটি গতিশীল সংগঠন। সদস্যরা নিজেদের মধ্যে যে আদর্শিক চিন্তা লালন করেন বাস্তব কাজের মাধ্যমে ময়দানে তার প্রতিফলন ঘটাতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নির্বাহী পরিষদ সদস্য মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, যে পরিকল্পনা ভারসাম্যপূর্ণ, বাস্তবভিত্তিক হয় তা অর্ধেক সম্পন্ন হওয়ার সমান। পরিধি বাড়ানোর পাশাপাশি বিভাগগুলোকেও এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিতে হবে। দায়িত্বশীলদের আরও বেশি সচেতন হতে হবে। জামায়াতে ইসলামীর জন্য জনগণের ইতিবাচক মনোভাব, সমর্থন, আস্থা, বিশ্বাস বেড়েছে। চূড়ান্ত জায়গায় যেতে হলে আরও কিছু ধাপ অতিক্রম করতে হবে। আস্থার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। অত্যন্ত সতর্ক থেকে দায়িত্বশীলদের দায়িত্ব পালন করতে হবে।

তিনি বলেন, মানুষের প্রত্যাশাকে গুরুত্ব দিতে হবে। সংখ্যাকে গুরুত্ব দিয়ে আল্লাহর রাসুলের (সা.) বিজয় আসেনি। প্রত্যেককে যথার্থ মানের হতে হবে। ২৪ সালের বিপ্লবের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা যে আমানত আমাদের হাতে দিয়েছেন তা কোনভাবে হাতছাড়া হতে দেয়া হবে না। আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামের বাংলাদেশ, ইনশাআল্লাহ।

সভাপতির বক্তব্যে মহানগরী আমীর আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী বলেন, আমলি জিন্দেগী ব্যাপারে আরও যত্নশীল হতে হবে। হতাশ হওয়া যাবে না। মানুষের আকাঙ্খা পূরণে প্রত্যেক থানায় জনসংযোগ করতে হবে। কারো কথা বা আচরণে কষ্ট পেয়ে থাকলে ইহতেসাব করতে হবে। সর্বোপরি চট্টগ্রামের প্যারেড মাঠে আগামী ২৭ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিতব্য পাঁচদিন ব্যাপী তাফসিরুল কোরআন মাহফিল সফল করার উদাত্ত্ব আহ্বান জানান তিনি।

ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে আরও উপস্থিত ছিলেন আমির হোসাইন, মোহাম্মদ আবুল মোকাররম, ফখরে জাহান সিরাজী সবুজ, মাহমুদুল আলম, মোহাম্মদ ফারুকে আজম, আবদুল গফুর, অধ্যক্ষ মুহাম্মদ সেলিম, মাওলানা মুহাম্মদ নুরুল আলম, অধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান চৌধুরী, অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর ভূঁইয়া, মাওলানা মোহাম্মদ জাকির হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুল হাসান রুমী, মোহাম্মদ ইসমাইল, সুলতান আহমদ, আহমদ খালেদুল আনোয়ার, ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ রুহুল আমিন, এডভোকেট আরিফুর রহমান প্রমুখ।