চট্টগ্রামে দেড় শতাধিক শ্রমিককে নির্যাতনকারী শ্রমিকলীগ নেতা জানে আলম অধরা

আয়নাঘর কায়দায় চট্টগ্রাম নগরের নতুন ব্রিজ এলাকায় টর্চার সেল খুলে ১৭ নং রোডের পরিবহন শ্রমিকদের যুবলীগ লীগ নেতা জানে আলমের নির্যাতন ও নিপীড়ন চালাতো। কেউ তাকে চাঁদা না দিয়ে লোহার হাতল, হকিস্টিক দিয়ে আঘাত করে হাত, পা থেঁতলে দিত। এমন নির্যাতনের শিকার অন্তত ১৫০ জনেও অধিক সিএনজি অটোরিকশা ও মেক্সিমা চালক সংবাদ সম্মেলনে বর্ণনা দিতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে নগরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে নির্যাতনের শিকার হওয়া চট্টগ্রাম অটো টেম্পো শ্রমিক ইউনিয়নের (রেজি নং- ১৩০৯/৮৭) শ্রমিকরা এমন অভিযোগ করেন। তাঁরা কোটা আন্দোলনের নিহত শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রাব্বি হত্যা মামলার অন্যতম আসামি জানে আলমকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী ইমাম। উপস্থিত ছিলেন সভাপতি জাহেদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো.আলমগীর, কার্যকরী গোলাম মোস্তফা, মোহাম্মদ আলমগীর, কায়সার কালু, নূর বশর প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ১৭ নম্বর রোডে তিন শতাধিক টেম্পো থেকে নানা কায়দায় জনে আলমের মাসে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে চালকরা। সেই টাকায় বাকলিয়া থানা ও ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া শ্রমিক ও ইউনিয়নের নেতাদের মামলা হামলা দিয়ে হয়রানি করেছে জানে আলম। ২০১২ সালে নতুন ব্রিজে টেম্পোতে হেলপার হিসেবে কাজ করতে আসা জানে আলম এই কয়দায় বছরে কোটিপতি বনে গেছে।

যেখানে দিনশেষে চালক হেলপারদের নিত্যদিনের বাজার সদাই কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সেখানে চাঁদাবাজির টাকায় বাকলিয়া মৌজার রাজাখালী এলাকায় গতবছর জায়গা কিনেছেন জানে আলম ( বিএস দাগ-৬৬৫৯ ও ৬৬৬৪)।এছাড়া চন্দনাইশে একটি কমিউনিটি সেন্টারের মালিকানা ও প্রাইভেট কারও কিনেছেন এই চাঁদাবাজির টাকায়।

তার এইসব অবৈধ রাজত্ব কায়েম করতে নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরি করেছে। তারাই বিভিন্ন সময় শ্রমিকদের উপর লাঠি, পাইপ ও কিরিচ নিয়ে হামলা করেছে। র্যাব পুলিশের একাধিক অভিযানে তারা বেশ কয়েকবার গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। টর্চার সেল থেকে লাঠি, পাইপ ও কিরিচ উদ্ধার করা হয়।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে জানে আলম তার বাহিনী নিয়ে হামলা করেছে। এ ঘটনার নতুন করে চান্দগাঁও, বাকলিয়া ও কোতোয়ালিতে তিনটি মামলা করা হয়েছে। ৫ আগস্ট জানে আলম পালিয়ে গেলেও আড়াল থেকে আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জন দিয়ে মামলা করার চেষ্টা করছে। জানে আলমের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে দুজন জিডি করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে শ্রমিকরা নিজেদের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে দাবি করেন।