মোকাম্মেলের সম্পদের দায়িত্ব নিলেন যুবলীগ ক্যাডার জয়নাল।

স্বৈরাচার হাসিনা সরকার পতনের পর পালিয়েছেন হাজার কোটি টাকা লুটপাট কারী ইউনিয়ন ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা এ বি এম মোকাম্মেল হক চৌধুরী। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও টাকা পাচারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কার্যালয়ে তাঁর দুর্নীতির বিষয়ে একটি অভিযোগ জমা পড়ে। অভিযোগে বলা হয়, এ বি এম মোকাম্মেল হক চৌধুরীর সঙ্গে বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, এস আলম গ্রুপ ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যবসা রয়েছে। আওয়ামী লীগের ক্ষমতা দেখিয়ে তিনি ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত টাকা লুটপাট ও পাচার করেছেন। তিনি মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানেরও ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে এখন সিঙ্গাপুর অবস্থান করছে বলে জানা যায়। পালানোর পর দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সম্পদ গুলো অভিভাবকহীন হয়ে যায়। এরপর তার আস্থাভাজন বাঁশখালী যুবলীগ ক্যাডার জয়নাল আবেদিন কে ডেকে নিয়ে যায় সিঙ্গাপুরে। জয়নাল প্রায় এক সপ্তাহ অবস্থানের পর গতকাল বাংলাদেশে ফিরে আসে। মোকাম্মেলের পরামর্শে জয়নাল এবং তার পিতা আসহাব উদ্দিন মদন অভ্যুত্থান পরবর্তী বিএনপি নেতাদের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি করেন। তারই ধারাবাহিকতায় বিএনপি কয়েকজন দুর্নীতিগ্রস্থ নেতা জয়নাল কে বাঁশখালী উপজেলা যুবদলে এবং তার পিতা আসহাব উদ্দিন মদন কে দক্ষিণ জেলা বিএনপিতে পুনর্বাসন করবেন বলে আশ্বস্থ করেন। সেই আশ্বাস পেয়েই যুবলীগ নেতা জয়নাল চলে যান সিঙ্গাপুরে মোকাম্মেলের কাছে। নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা যায় সেখানে গিয়ে জয়নাল এক সপ্তাহ অবস্থান করেন। বাংলাদেশে থাকা মোকাম্মেলের সম্পদ এবং ব্যবসা পরিচালনার দায়িত্ব নেন। সেখানে তারা দুই জনের মধ্যে কথা হয় বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে তার সম্পদ রক্ষার। আওয়ামী লীগ নেতা মোকাম্মেল কৌশলে জয়নাল আবেদিন কে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা এবং প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্তাদের কাছে পাঠিয়ে প্রলোভন দেখিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানা যায়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে মোকাম্মেলের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভূমিদস্যুতার অভিযোগও রয়েছে। উল্লেখ্য আওয়ামী লীগের সব শেষ উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি খোরশেদ আলমের পক্ষে ভোট করায় যুবলীগ ক্যাডার জয়নাল আবেদিনের পিতা আসহাব উদ্দিন মদন কে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়। বিএনপি থেকে বহিষ্কার বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমাকে বিএনপি ভোট দেয়নি, আওয়ামী লীগ ভোট দিছে। বিএনপি বহিষ্কার করলে আমার কোন সমস্যা নেই। আমি খোরশেদ ভাইয়ের জন্য ভোট করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্য করেছি। এসময় আসহাব উদ্দিন মোকাম্মেল এবং এস আলম গ্রুপের আরেক লুটেরা আদিল তার ছেলে জয়নাল আবেদিনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলেও উল্লেখ করেন। উল্লেখ্য বিএনপির কমিটিতে থাকা অবস্থায় তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্যের পদও ভাগিয়ে নেন। এরপর ৫ আগস্ট স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পতনের পর তারা বাপ-ছেলে লেবাস পাল্টাতে শুরু করেন। এবার তাদের মিশন নিজেদের বিএনপি প্রমাণে কাজ করবেন। লুটেরা মোকাম্মেলের সম্পদ রক্ষায় তারা বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে প্রভাব বিস্তার করবেন। গেল ১৭ বছরের স্বৈরশাসকের দোসর হিসেবে আওয়ামী লীগের সকল দলীয় কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশ গ্রহণ করেছেন তারা বাপ-ছেলে। অর্থায়ন করেছেন আওয়ামী লীগের সকল দলীয় কর্মকান্ডে।