

চট্টগ্রাম নগরীর নাসিরাবাদে অংকুর সোসাইটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান-২০২৫ আজ সোমবার সোসাইটির মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশে প্রতিযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, “প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিশুদের এগিয়ে যেতে হবে, কেননা সুস্থ প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায় ও ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করে।”
মেয়র বলেন, প্রতিযোগিতায় জয়-পরাজয় স্বাভাবিক বিষয়। আজকের এই পুরস্কার বিতরণের অনুষ্ঠানে যারা জয়ী হয়েছে, তাদের এই সাফল্য ধরে রাখতে হবে, আর যারা বিজয়ী হতে পারেনি, তাদের আগামীতে জয়ের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। সুস্থ প্রতিযোগিতা আমাদের সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে। যারা পুরস্কার লাভ করেছ আর পুরস্কার লাভ করতে পারোনি সবাইকে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমরা যারা রাজনীতিবিদ আছি সমাজবিদ আছি প্রত্যেক জায়গায় কম্পিটিশন আছে এবং সেটা থাকবে থাকা উচিত। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিশুদের মধ্যে ইতিবাচক মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। সমাজে গঠনমূলক আলোচনা ও সমালোচনার সুযোগ থাকা উচিত, তবে তা যেন প্রতিহিংসার রূপ না নেয় এটা আমাদের মনে রাখতে হবে।
“এখান থেকে দুটো শিক্ষা নিতে হবে যারা এখানে আজকে জিতেছ তাদেরকে এই মনোভাব পোষণ করতে হবে আমাদের এই জিতটাকে আমাদের ধরে রাখতে হবে আর আজকে আমরা জিততে পারিনি যারা এই কমিটমেন্ট রাখতে হবে আগামীতে আমরাই জিতব কাজেই এই যে জিতার একটা ধরে রাখার কমিটমেন্ট আরেকটার সামনে জিতব এই কমিটমেন্ট এটা যদি আমাদের সর্বক্ষেত্রে থাকে তাহলে কিন্তু আমরা এই সমাজেকে অনেক কিছু দিতে পারব।”
শহরের পরিচ্ছন্নতা ও পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয়ে তিনি বলেন, শহরকে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন রাখতে হলে শিক্ষার্থীদের ছোটবেলা থেকেই সচেতন হতে হবে। প্লাস্টিক ও পলিথিন ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে এবং নির্দিষ্ট স্থানে আবর্জনা ফেলার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। তিনি স্কুলের জন্য ডাস্টবিন সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দেন যাতে শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট জায়গায় আবর্জনা ফেলতে পারে এবং শিক্ষার্থীদের প্লাস্টিকের বোতলের পরিবর্তে কাচের গ্লাস ও জার ব্যবহারের আহ্বান জানান।
শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য ও সঠিক বিকাশের ওপর গুরুত্ব দিয়ে মেয়র বলেন, প্রতিটি স্কুলে চাইল্ড হেলথ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নয়, শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যও সমান গুরুত্বপূর্ণ। অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী আছে, যারা তাদের যথাযথ দক্ষতা প্রদর্শন করতে পারে না। চাইল্ড সাইকোলজিস্টের মাধ্যমে তাদের সাইকোথেরাপি দেওয়া হলে তারা ভালো ফলাফল করতে পারবে। প্রতিটি স্কুলে একজন করে সাইকোলজিস্ট থাকা উচিত। সপ্তাহে অন্তত দুদিন তারা ক্লাস নিলে বাচ্চাদের মনোযোগ বাড়বে।”
রেড ক্রিসেন্ট প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি আরো জানান, আগামীতে চট্টগ্রাম রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির নতুন ক্যাম্প শুরু হতে যাচ্ছে। আমি সকল শিক্ষার্থীদের এই ক্যাম্পে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। সেখানে নতুন করে অনেক কিছু শেখার সুযোগ রয়েছে।
পরিশেষে, তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় আমরা একটি ক্লিন, গ্রিন ও হেলদি সিটি গড়ে তুলতে চাই। ইনশাআল্লাহ, সবাই মিলে চট্টগ্রামকে আরও সুন্দর ও বাসযোগ্য নগরীতে রূপান্তর করব। এই রাষ্ট্রকে আমরা সবাই মিলে একটি সুন্দর সমৃদ্ধশালী দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশে পরিণত করতে পারব।
বিদ্যালয়ের সভাপতি মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম চৌধুরী’র সভাপতিত্বে শ্বেতা চৌধুরীর সঞ্চালনায় এতে আরো উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কবিতা চৌধুরী , প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ, বেলাল হোসেন , শাহ আলম, কাজী সুলতানা ইয়াসমিন, অভিভাবক মোঃ রাশেদ কালামসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।