রাষ্ট্র সংস্কারে স্বাস্থ্য-স্থানীয় সরকারসহ আরও ৪ কমিশন

 

রাষ্ট্র সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে নতুন করে স্বাস্থ্য, স্থানীয় সরকার, শ্রম এবং নারী বিষয়ক সংস্কারে আরও ৪টি কমিশন গঠন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। এসব সংস্কার কমিশনে একজন করে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি রাখা হলেও শ্রম এবং স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনে শিক্ষার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি।

 

সোমবার (১৮ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার অনুশাসন অনুযায়ী কমিশনের সদস্যদের নাম প্রস্তাব করে প্রজ্ঞাপন জারির কথা জানিয়েছে তার কার্যালয়। এতে বলা হয়েছে, ৯০ দিনের মধ্যে কমিশন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে তাদের প্রতিবেদন হস্তান্তর করবে।

 

কমিশনের কার্যালয় ও সদস্যদের সুযোগ-সুবিধা ঠিক করবে অন্তর্বর্তী সরকার। সদস্যরা চাইলে বিনা বেতনে কাজ করতে পারবেন এবং কমিশনের কাছে প্রয়োজনীয় তথ্য-সহায়তা করা বাধ্যতামূলক থাকবে। এর আগে গত ১১ সেপ্টেম্বর সংস্কারের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে নির্বাচন, পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, জনপ্রশাসন ও সংবিধান সংস্কারে কমিশন গঠন করার ঘোষণা দেন প্রধান উপদেষ্টা।

 

স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনে যারা

 

বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি প্রফেসর একে আজাদ খানের নেতৃত্বে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের সদস্য করা হয়েছে ১১ জনকে। সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন- বিএসএমএমইউ’র জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য ইনফরমেটিক অধিদপ্তরের প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ জাকির হোসেন, পথিকৃৎ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর লিয়াকত আলী এবং গাইনোকলজিস্ট প্রফেসর ডা. সায়েবা আক্তার।

 

আরও আছেন- শিশু স্নায়ুতন্ত্র বিভাগের প্রফেসর ডা. নায়লা জামান খান, সাবেক সচিব এমএম রেজা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র সাবেক আঞ্চলিক উপদেষ্টা (দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চল) প্রফেসর ডা. মোজাহেরুল হক, আইসিডিডিআর, বি’র ডা. আজহারুল ইসলাম, স্কয়ার হাসপাতালের স্কয়ার ক্যানসার সেন্টারের প্রফেসর ডা. সৈয়দ মো. আকরাম হোসেন, গ্রীন লাইফ সেন্টার ফর রিউম্যাটিক কেয়ার এন্ড রিসার্চের চিফ কনসালটেন্ট প্রফেসর ডা. সৈয়দ আতিকুল হক, আইসিডিডিআর, বি’র শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য বিভাগের বিজ্ঞানী ডা. আহমেদ এহসানুর রাহমান এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ঢাকা মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী উমায়ের আফিফ।

 

স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনে যারা

 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদকে প্রধান করা হয়েছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের। এই অধ্যাপকের নেতৃত্বে কাজ করবেন সাত সদস্য। তাদের মধ্যে রয়েছেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ফেরদৌস আরফিনা ওসমান, সাবেক সচিব এএমএম নাসির উদ্দিন, সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী আব্দুর রহমান।

 

এছাড়া রয়েছেন- বিআইএসএস’র পরিচালক ড. মাহফুজ কবির, নারী উদ্যোগ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক মাসুদা খাতুন শেফালী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. তারিকুল ইসলাম এবং একজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি (নাম প্রকাশ করা হয়নি)।

 

শ্রম সংস্কার কমিশনে যারা

 

বিলস’র নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদকে প্রধান করে এই কমিশনে নয়জন সদস্য রাখা হয়েছে। তারা হলেন- সাবেক সচিব ড. মাহফুজুল হক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সভাপতি তপন দত্ত, বাংলাদেশ লেবার কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি এডভোকেট একেএম নাসিম।

 

বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি ম কামরান টি রহমান, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ’র সভাপতি চৌধুরী আশিকুল আলম, বাংলাদেশ লেবার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সাকিল আখতার চৌধুরী, আলোকচিত্রী ও শ্রমিক আন্দোলন সংগঠক তাসলিমা আখতারভ এবং একজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি (নাম প্রকাশ করা হয়নি)।

 

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনে যারা

 

এই কমিশনের নেতৃত্ব দেবেন নারীপক্ষ’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শিরীন পারভিন হক; তিনি কাজ করবেন নয় সদস্য নিয়ে। তাদের মধ্যে রয়েছেন- ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স এন্ড ডেভেলপমেন্টের সিনিয়র ফেলো মাহীন সুলতান, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট’র অবৈতনিক নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ফৌজিয়া করিম ফিরোজ।

 

কমিশনে আরও আছেন- বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি কল্পনা আক্তার, নারী স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ হালিদা হানুম আক্তার, বাংলাদেশ নারী শ্রমিক কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরুপা দেওয়ান, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক সিনিয়র সামাজিক উন্নয়ন উপদেষ্টা ফেরদৌসী সুলতান এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধি নিশিতা জামান নিহা।