চট্টগ্রাম বন্দরের দরপত্রবিহীনভাবে বিদেশি কোম্পানির হাতে হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন। কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র এবং ভৌগোলিকভাবে অত্যন্ত স্পর্শকাতর এলাকা।
এক বিবৃতিতে তিনি জানান, বন্দর ও এর পার্শ্ববর্তী ১০ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় রয়েছে নৌবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর, চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সার কারখানা, তেল শোধনাগার, কেইপিজেড, সিইপিজেডসহ অন্যান্য কৌশলগত প্রতিষ্ঠান। এসব স্থাপনা দেশের সার্বভৌমত্ব এবং নিরাপত্তার সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত। সেক্ষেত্রে কোনো দরপত্রবিহীন, অস্বচ্ছ বা গোপন চুক্তির মাধ্যমে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে বন্দর হস্তান্তর করা “দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের অংশ” হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
এ সময় এস এম লুৎফর রহমান চট্টগ্রাম বন্দরের বিষয়ে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ছয় দফা দাবি তুলে ধরেন—
১. দেশীয় ব্যবস্থাপনায় বন্দর পরিচালনা: বন্দর ইতিমধ্যেই লাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়ায় দেশীয় ব্যবস্থাপনায় পরিচালনার প্রয়োজন। প্রয়োজনে দক্ষ বিদেশি কর্মকর্তা ও আধুনিক যন্ত্রপাতি আনা যেতে পারে।
২. উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে বিদেশি নিয়োগ: একান্ত প্রয়োজন হলে আন্তর্জাতিক নিয়মে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করে দায়িত্ব দেওয়া উচিৎ।
৩. স্বৈরাচারপন্থী প্রতিষ্ঠানের কাছে দায়িত্ব নয়: পতিত স্বৈরাচারের সঙ্গে যুক্ত কোনো কোম্পানিকে বন্দর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়া যাবে না।
৪. চুক্তির স্বচ্ছতা নিশ্চিত: কোনো চুক্তি গোপন রাখা যাবে না; মৌলিক বিষয়গুলো জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে।
৫. আধুনিকায়ন ও দুর্নীতিমুক্তকরণ: বন্দরকে আধুনিক ও দুর্নীতিমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় সংস্কার জরুরি।
৬. শ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা: বন্দরে শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে এবং দ্রুত সিবিএ নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।
বিবৃতিতে ফেডারেশন উল্লেখ করেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তা, শ্রমিক অধিকার ও দেশের সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণের জন্য এই দাবি বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত জরুরি।