বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরীর ভারপ্রাপ্ত আমীর পরিবেশবিদ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেছেন, ‘গঠনমূলক রাজনীতিতে ফিরে না এলে ৩৬ জুলাই বিপ্লবের ফসল পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের হাতেই চলে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘লগি-বৈঠার তাণ্ডবের মাধ্যমেই বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা থেমে গিয়েছিল। হাজারো শহীদের ত্যাগ আর জুলুম-নির্যাতনের মধ্য দিয়ে ৩৬ জুলাই বিপ্লব আল্লাহ দান করেছেন। এখন সময় নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করে গঠনমূলক, পজিটিভ রাজনীতি করার।’
মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগরীর দেওয়ানবাজারস্থ বাংলাদেশ ইসলামী একাডেমি (বিআইএ) মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর এক বিশেষ কর্মপরিষদ বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ গঠনের প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ও তার দোসররা পরিকল্পিত প্রোপাগান্ডা ও অগ্নিসন্ত্রাস ছড়িয়ে দিচ্ছে। এখন ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্যকে আরও সুদৃঢ় করা সময়ের দাবি।’
তিনি সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ড প্রসঙ্গে বলেন, ‘চট্টগ্রামের ইপিজেড, সিলেট ও ঢাকার বিমানবন্দরে লাগা আগুন জনগণের উদ্বেগ বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। এ সময় আওয়ামী রাজনীতির অনুসরণে অন্য দলের সভা-সমাবেশে হামলার ঘটনা বোদ্ধা মহলকে ভাবিয়ে তুলছে।’
কুরআন শিক্ষায় হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আল্লাহভীরু সৎ ও যোগ্য মানুষ তৈরিতে মসজিদভিত্তিক কুরআন শিক্ষার বিকল্প নেই। নোয়াখালীতে কুরআন শিক্ষায় হামলা চরম ফ্যাসিবাদী আচরণ। হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দৈনিক আমার দেশ’-এর সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের প্রতিনিধির ওপর হামলা ফ্যাসিবাদ পুনঃপ্রতিষ্ঠার মহড়া ছাড়া কিছু নয়। দখলবাজি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসনির্ভর রাজনীতি চললে বিপ্লবের ফসল স্বৈরাচারের দোসরদের হাতেই চলে যাবে এবং বিএনপির অস্তিত্বও হুমকিতে পড়বে।’
নজরুল ইসলাম জাতীয় নির্বাচন বিষয়ে বলেন, ‘নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশে জনগণের ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত দলকেই সরকার গঠন করতে দিতে হবে। জুলাই সনদ জাতীয় সমঝোতার শুভ লক্ষণ হলেও সেটাকে গণভোট ও সাংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে আইনি মর্যাদা দিতে হবে। মিক্সড পদ্ধতির পিআর সিস্টেম গ্রহণ করা হলে প্রার্থী ও দলের মর্যাদা উভয়ই রক্ষিত হবে।’
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা খাইরুল বাশার, মোহাম্মদ উল্লাহ, ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুস, নগর কর্মপরিষদ সদস্য ডা. সিদ্দিকুর রহমান, নগর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি এস. এম. লুৎফুর রহমান, নগর কর্মপরিষদ সদস্য আবু হেনা মোস্তফা কামাল, হামেদ হাসান ইলাহী, আমির হোসাইন, মাওলানা মমতাজুর রহমান, প্রফেসর মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ ও ফখরে জাহান সিরাজী প্রমুখ।