বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যেকোন মূল্যে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা যে কোন মূল্যে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, মানুষের স্বাধীনতা, ভোটের স্বাধীনতা, জনগণের স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবো। কারণ, আমরা আপনাদের (গণমাধ্যম) সঙ্গে আছি, জনগণের সঙ্গে আছি।’
তিনি আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ‘আক্রমণের মুখে স্বাধীন সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন -‘নোয়াব’ রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। নোয়াব’র সভাপতি একে আজাদের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন। সংবাদ মাধ্যমের ওপর আক্রমণের নিন্দা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বিবৃতি দিয়ে বিষয়গুলোর নিন্দা জানিয়েছি।
গত ১৫ বছর সব সময় ভয়ে ছিলাম, আতঙ্কে ছিলাম। কখন কোন মুহূর্তে লেখার জন্য, বলার জন্য, বিশেষ করে যারা পত্র-পত্রিকায় লিখতেন তারা এবং আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের কখন কী বলার জন্য যাতে কারাগারে যেতে না হয়, মামলা না হয় এই বিষয়গুলো নিয়ে বিবৃতি দিয়েছি।’
বিএনপি’র মহাসচিব বলেন, ‘আজকে এ সময়ে,এই বিষয়ে কথা বলতে হবে এটা আমি আগে কখনো ভাবিনি। বিশেষ করে ৫ আগস্টের পর যখন আমরা সবাই মুক্ত একটা দেশে, ফ্যাসিস্ট মুক্ত একটা পরিবেশে বাস করছি। দুর্ভাগ্য আমাদের, আজকে ৫৩ বছর পর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পরেও এই মিডিয়ার উপরে আক্রমণের বিষয় নিয়ে আমাদের কথা বলতে হচ্ছে। আমি গত পরশুও বলেছি, তার আগে আমি বিবৃতি দিয়েছি। আমরা এর ধিক্কার ও নিন্দা জানাই। আমরা সব সময় মনে করি, আমাদের লড়াইটাই বাকস্বাধীনতার জন্য, গণতন্ত্রের জন্য। আমি আমার কথা বলতে চাই, আমি আমার অধিকার প্রয়োগ করতে চাই, ভোটের অধিকার প্রয়োগ করতে চাই। এই বিষয়গুলো অত্যন্ত জরুরি।’
তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্য আমাদের। আজকে কিছু মানুষ জাতিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। কিছু কথা বলা হচ্ছে, যেগুলো পুরোপুরি নৈরাজ্যের ও এনার্কির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এটা আমাদের সকলের ঐক্যবদ্ধ হয়ে বন্ধ করা দরকার। না হলে যে লক্ষ্য নিয়ে আমাদের ছেলেরা প্রাণ দিয়েছে, আমাদের মানুষেরা প্রাণ দিয়েছে, তার সবটাই ব্যর্থ হয়ে যাবে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় থেকে আজ পর্যন্ত যতগুলো আন্দোলন সংগ্রাম আমরা করেছি গণতন্ত্রের জন্য,মাঝে মাঝে হঠাৎ করে কিছু কাজ হয় যেটা বিরাজনীতিকীকরণের দিকে নিয়ে যায়।’
মির্জা ফখরুল বলেন,‘এটা আমাদের সকলকে অত্যন্ত সচেতনভাবে পরিহার করা দরকার। আমি মনে করি, নির্বাচিত সরকার যেকোন সরকার থেকে ভালো, সে যেই আসুক। কিন্তু আমি সেটাকে ঠিক করে দেব, নিয়ন্ত্রণ করবো, গণতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করবো এটা আমি বিশ্বাস করি না। গণতন্ত্রের চর্চা হোক, সেই চর্চার মধ্য দিয়ে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব।’
তিনি বলেন, ‘একটা নৈরাজ্য সৃষ্টি করা, হটকারিতার দিকে যাওয়া, এই মুহূর্তে জাতির জন্য ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়াবে। আমরা বারবার এ কথা বলছি। বাংলাদেশে গণতন্ত্রের যে সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে, মানুষের আশা আকাঙ্খাগুলোকে বাস্তব রূপ দেয়ার যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, সেটিকে নস্যাৎ করার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে। এটা রুখতে হবে।’