চট্টগ্রামে বল প্রয়োগে পদত্যাগে বাধ্য হওয়া সেই শিক্ষকের মৃত্যু

হাজেরা তজু ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর এসএম আইয়ুব স্ট্রোক করে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্না লিল্লাহি… রাজেউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর। তিনি স্ত্রী ও তিন পুত্র সন্তানসহ অনেক আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। গতকাল শনিবার বিকালে চান্দগাঁও মৌলভী পুকুর পাড় মসজিদ প্রাঙ্গণে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। আজ রোববার বাদে জোহর বাঁশখালীর কাথারিয়ায় নিজের প্রতিষ্ঠিত মাস্টার আবু আহমদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, এসএম আইয়ুব দীর্ঘদিন ধরে হাজেরা তজু ডিগ্রি কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রধান এবং গত বছর থেকে কলেজটির উপাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। সম্প্রতি তাকে কলেজ থেকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। প্রফেসর আইয়ুব বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি। এ ঘটনার পর তিনি মানসিকভাবে এতটাই ভেঙে পড়েন যে, তিনি স্বাভাবিকভাবে কারো সাথে কথা বলেননি এবং বেশিরভাগ সময় চুপচাপ থাকতেন। গতকাল শনিবার সকালে স্ট্রোক করলে তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসে কিছু ছাত্র নামধারী সন্ত্রাসীসহ একটি দল কলেজের উপাধ্যক্ষ আইয়ুবের ওপর হামলা করে।

এ বিষয়ে কলেজের শিক্ষকরা জানিয়েছেন, ন্যাক্করজনক ঘটনা ঘটেছিল ২৪ সেপ্টেম্বর। সেদিন কথিত ছাত্র পরিচয়  দিয়ে বহিরাগতরা চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও থানা এলাকার হাজেরা তজু ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ আইয়ুবকে বলপ্রয়োগ করে পদত্যাগে বাধ্য করেছে। একইভাবে অধ্যক্ষকে মারধর করে কলেজের আরও ৩ শিক্ষককে বরখাস্ত করতে বাধ্য করা হয়।
সেদিন দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে অবস্থান করে একটি দল চরম নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল। সেসময় সাধারণ শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বহিরাগত ছাত্রদের হত্যার হুমকিতে এক পর্যায়ে কলেজের উপাধ্যক্ষ এসএম আইয়ুব অসুস্থ হয়ে মাটিতে পড়ে যান। তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান সহকর্মীরা।

কলেজের সিনিয়র শিক্ষকরা বলেন প্রায় ৩৪ বছরের আমাদের এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষা প্রসারে চট্টগ্রামে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে ।তার মৃত্যুর খবর শুনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা শোক জানানোর পাশাপাশি ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।