দেশের সংকটে যে সমাধান দেখছেন তারেক রহমান

সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের সব সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে মন্তব্য করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “একমাত্র নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের সব সমস্যা সমাধান সম্ভব। সব সমস্যা দূর করতে প্রয়োজন জনপ্রতিনিধি। এই কথাগুলো সরকার ও জনগণের কাছে আমাদের তুলে ধরতে হবে। নির্বাচন, নির্বাচন, নির্বাচন দিন, নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। দেশটাকে যদি গড়ে তুলতে হয় তাহলে একমাত্র পথ নির্বাচন।”

শনিবার (২৩ নভেম্বর) চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথি বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এ রআগে বেলা ১১টার দিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্মেলন উদ্বোধন করেন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী ও চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শাহসুদ্দিন দুদু।

সভায় তারেক রহমান বলেন, “নির্বাচনে মাধ্যমে যারা সংসদে যাবে তারা প্রকৃত সংস্কার করবে। তারা দেশের মানুষের চাওয়া পূরণ করবে৷ এই সরকার একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে সক্ষম হলে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা জনগণের কথা বলবে। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সিদ্ধান্ত নিতে পারবে কীভাবে দেশের মানুষের সমস্যা সমাধান করা যায়। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা দেশের প্রতিটি সেক্টরের সংস্কার করতে পারবে।”

সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “বিএনপি আরও ২ বছর আগে রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা প্রস্তাব দিয়েছিল। বর্তমান সরকারও সংস্কারের কথা বলেছে। তবে এই সংস্কারের প্রস্তাব প্রথম বিএনপি দিয়েছিল। বিএনপি মানুষের অধিকারে কথা চিন্তা করে বলেই সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। একজন সংস্কার শুরু করে গেলে বাকিরা তা চালিয়ে যাবে। এটি একদিনের কোনো বিষয় না।”

নির্বাচন ব্যাতিত দেশের সমস্যা আরও বৃদ্ধি পাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা যেসব সংস্কারের কথা বলছেন সে সব সংস্কার বাস্তবায়ন সম্ভব প্রকৃতি নির্বাচনের মাধ্যমে। নির্বাচন যত দেরি হবে তত ষড়যন্ত্র বৃদ্ধি পাবে। দেশের মানুষ যে স্বৈরাচারকে বিদায় করেছে তারা কিন্তু বসে নেই। তারা দেশি-বিদেশি প্রভুদের নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। নির্বাচন যত দেরি হবে, সমস্যা ততই বৃদ্ধি পাবে।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ আজ স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ পরিচালনা করছে। যারা বিগত বছরগুলোতে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল তারা এই সরকারকে সমর্থন দিয়েছে। বিএনপিও এই সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে। বিএনপি মানুষের কথা বলার অধিকারের জন্য দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করেছে। মানুষের সব অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার নির্বাচন প্রয়োজন। নির্বাচনে মাধ্যমে মানুষের হাতে অধিকার তুলে দিতে হবে।”

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, “বিএনপি জনগণের দল এটি যদি বিশ্বাস করেন তাহলে জনগণের কাছে যান। বিএনপি যখন রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে তখন দেশের মানুষকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছিল, দুর্ভিক্ষ থেকে মুক্তি দিয়েছিল। শহিদ জিয়ার নেতৃত্বে খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব দেশের উন্নতি হয়েছে। তাই দেশের অধিকাংশ মানুষ মনে করে বিএনপি দেশের দায়িত্ব নিলে দেশ এগিয়ে যাবে। আপনাদের দায়িত্ব নেওয়ার মতো করে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। আপনি যে পর্যায়ের হোন না কেন,  আপনি শহিদ জিয়ার সৈনিক। আপনার এলাকার মানুষের প্রত্যাশা পুরণ করতে হবে। যদি আপনারা দায়িত্ব পালন করতে নিজেকে প্রস্তুত করেন তাহলে মানুষ আপনাদের দায়িত্ব দেবে। ”

সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “সংস্কার শেষ করে সাসটেইনবল করতে দরকার জনগণের প্রতিনিধি, এর জন্য দরকার পার্লামেন্ট। অনেকেই বলেন ‘বিএনপি শুধু নির্বাচন চায়’। বিএনপি নির্বাচন চায় দেশকে রক্ষা, গণতন্ত্র, মানুষের জন্য ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য।”

তিনি বলেন, “আমাদের পরিষ্কার কথা আমরা তরুণদের রাষ্ট্রের দায়িত্ব ও নেতৃত্ব দিতে চাই। তরুণ ও ছাত্রদের সাথে আমাদের কোন সমস্যা নেই। সবাইকে নিয়ে একটি সরকার গঠন করব আমরা।”