বিএনপির বহিষ্কারাদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি : আমাকে বিএনপি ভোট দেয়নি, ভোট দিয়েছে আওয়ামী লীগ – আসহাব উদ্দিন চেয়ারম্যান

আসহাব উদ্দিন প্রকাশ মদন। তিনি বাঁশখালী উপজেলার ১ নং পুকুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। ২০১৬ সালে তিনি ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে বুকে নৌকার ব্যাচ পরে শপথ নিতে যান। দলের সাথে বেঈমানী করে সেখান থেকেই তার বিতর্কিত কর্মকান্ড শুরু। আওয়ামী লীগের সাথে হাত মিলিয়ে ২০১৬ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট পর্যন্ত এলাকাবাসীর উপর চালিয়েছেন দমন-পীড়ন, দখল, মামলা বাণিজ্য, দুর্নীতি এবং স্বেচ্ছাচারিতা। আসহাব উদ্দিন মদন ও তার বড় ছেলে জয়নাল আবেদীন নিজেদের আওয়ামী লীগ প্রমাণে মরিয়া হয়ে উঠেন। তাই তারা আওয়ামী লীগের নানা কর্মকাণ্ড বংগবন্ধুর জন্মদিন ও মৃত্যু বার্ষিকী উদযাপন সহ নানা কর্মসূচীত প্রকাশ্যে অংশ নেন এবং আর্থিকভাবে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেন বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ কে। তার ক্ষমতার দাপট, অনিয়ম দূর্নীতি নিয়ে জাতীয় গণমাধ্যমে একাধিকবার সংবাদ প্রচার হলেও ইউনিয়ন ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোকাম্মেল হকের মাধ্যমে প্রশাসন এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের ম্যানেজ করতেন। যার কারণে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় থাকার পরও কোন ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। তার বিরুদ্ধে দুদক, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ প্রশাসনের নানা দপ্তরে তার অনিয়ম দূর্নীতি এবং জুলুম নির্যাতনের অভিযোগ দিলেও তার ক্ষমতার দাপটে কোন অগ্রগতি নেই। সব শেষ উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি খোরশেদ আলমের পক্ষে ভোট করায় তাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়। বিএনপি থেকে বহিষ্কার বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমাকে বিএনপি ভোট দেয়নি, আওয়ামী লীগ ভোট দিছে। বিএনপি বহিষ্কার করলে আমার কোন সমস্যা নেই। আমি খোরশেদ ভাইয়ের জন্য ভোট করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্য করেছি। উল্লেখ্য বিএনপির কমিটিতে থাকা অবস্থায় তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্যের পদও ভাগিয়ে নেন। এরপর ৫ আগস্ট স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পতনের পর তারা বাপ-ছেলে লেবাস পাল্টাতে শুরু করেন। এবার তাদের মিশন নিজেদের বিএনপি প্রমাণে কাজ করবেন। এলাকায় আওয়ামী বিরোধী বেশ কয়েকটি বক্তব্য দেন মদন। এর পর ২৪ আগস্ট ফজরের নামাজের পর মুসল্লীরা মসজিদ থেকে বের হলে ১৯২৯ সালে প্রতিষ্ঠিত পুকুরিয়াইউনিয়নের চন্দ্রপুর জামে মসজিদ দখল করে মসজিদের নাম পরিবর্তন করে চন্দ্রপুর হাজী বসরত আলী জামে মসজিদ নামকরণ করে। এলাকায় প্রচার করেন আওয়ামী লীগ এই মসজিদ দখল করেছিল। এখন তিনি বিএনপি তাই উদ্ধার করেছেন। অথচ ১৯২৯ সালে মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে চন্দ্রপুর জামে মসজিদ নামে ছিল। এলাকাবাসী বলছেন এই মসজিদ আগে কখনো দখল হয়নি। দখল হয়েছে ৫ আগস্টের পর মদন চেয়ারম্যানের হাত ধরে। এরপর মসজিদ কমিটি জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দিলে জেলা প্রশাসক ইউএনও কে তদন্তের নির্দেশ দেন। গত ১৩ তারিখে ইউএনও অফিসে এই বিষয়ে শুনানির পর রিপোর্ট জমা দেয়ার অপেক্ষায়। কিন্তু প্রশাসন কে বৃদ্বাঙ্গুল দেখিয়ে গেল শুক্রবার জুমার নামাজের পর মসজিদের সামনে আবারও শোডাউন দেন তিনি। আওয়ামী বিরোধী বক্তব্য দিয়ে কড়া বিএনপি সাজার চেষ্টা করে মদন। বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ ভাড়া করে এনে মুসল্লী সাজিয়ে ছলে বলে কৌশলে বিএনপিতে পুনরায় শক্ত অবস্থান নিতে মরিয়া হয়ে উঠছে। সেই সাথে মসজিদ দখল করে আওয়ামী বিরোধী স্লোগানকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করছে। বর্তমানে তার ছেলে জয়নাল বাঁশখালী যুবদলের সহ সভাপতি পরিচয় দেন। অন্য দিকে বিএনপির কিছু নেতাকে ম্যানেজ করে মদন চেয়ারম্যান আসন্ন উপজেলা বিএনপি এবং দক্ষিণ জেলা বিএনপির পদ ভাগিয়ে নেয়ার জোর তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন।