আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম সামনে রেখে দলের পূর্বঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা ৩১ দফাকে ব্যাপক পরিসরে মানুষের কাছে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।
দলটির চাওয়া, আগামীতে হাঁটে–ঘাটে–মাঠে সর্বত্রই ৩১ দফা আলোচিত হবে। এর অংশ হিসেবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলে এক সেমিনারের আয়োজন করেছে বিএনপি। সেখানে যুগপৎ আন্দোলন এবং বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী রাজনৈতিক দলের নেতারাসহ বিশিষ্টজনদের উপস্থিতিতে ৩১ দফা রূপরেখাকে আবারও আনুষ্ঠানিকভাবে জাতির সামনে তুলে ধরা হবে।
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে লন্ডন থেকে সেমিনারে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এটি পুনরায় ঘোষণা করবেন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দলের মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান সেমিনারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর ফ্যাসিবাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলন শুরুর পর আন্দোলনরত সমমনা দলগুলোর সাথে আলোচনায় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে ৩১ দফা প্রণয়ন করে বিএনপি। যেটা গত বছরের ১৩ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে দলটি। বিএনপি নেতারা বলছেন, এই ৩১ দফা হচ্ছে আগামী দিনে বিএনপির রাষ্ট্র পরিচালনার একটি দলিল। এখন পর্যন্ত যারা রাষ্ট্র সংস্কারের ব্যাপারে নানা কথা বলছেন, বিভিন্ন ফর্মুলা দিচ্ছেন–তাদের কোনো ভাবনাই ৩১ দফা রূপরেখার বাইরে নয়। তবে গত বছর এই রূপরেখা ঘোষণা করা হলেও এটি জনগণের মাঝে ব্যাপকভাবে তুলে ধরা যায়নি। এ জন্য তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের দমন–পীড়নসহ উপযুক্ত পরিবেশ না থাকার কথা বলছে বিএনপি। ফলে ৩১ দফা সম্পর্কে মানুষের ধারণা স্পষ্ট নয়।
এদিকে বুধবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে নয়াপল্টনস্থ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ কমিটির আহবায়ক আব্দুল মঈন খানের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিএনপির ৩১ দফা জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে বিভাগীয় কর্মশালার তারিখ নির্ধারণ করা হয়। সে অনুযায়ী আগামী ১৯ নভেম্বর ঢাকায়, ২৩ নভেম্বর চট্টগ্রাম ও রাজশাহী, ২৫ নভেম্বর খুলনা, ৩০ নভেম্বর সিলেট, ২ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ, ৭ ডিসেম্বর রংপুর ও বরিশাল এবং ২১ ডিসেম্বর দলের ফরিদপুর ও কুমিল্লা সাংগঠনিক বিভাগে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ কমিটির সদস্য সচিব এ বি এম মোশাররফ হোসেন, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রাশিদা বেগম হীরা, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত, খুলনা বিভাগীয় সহ–সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ–সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন অর রশিদ, বরিশাল বিভাগীয় সহ–সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান, ফরিদপুর বিভাগীয় সহ–সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, ময়মনসিংহ বিভাগীয় সহ–সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ারেস আলী মামুন, রংপুর বিভাগীয় সহ–সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, সহ–প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রেহানা আক্তার রানু, সহ–ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. নেওয়াজ হালিমা আরলী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য (দপ্তরে সংযুক্ত) মো. আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী।