প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কোলে গড়ে ওঠা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) আজ ৬০ বছরের পথচলায় প্রবেশ করেছে। ১৯৬৬ সালের ১৮ নভেম্বর যাত্রা শুরু করা এ বিশ্ববিদ্যালয় দেশের উচ্চশিক্ষা ও সমাজের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
চবি বর্তমানে ৯টি অনুষদে ৪৮টি বিভাগ, ৬টি ইনস্টিটিউট, প্রায় ৯২০ জন শিক্ষক ও প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থী নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। শিক্ষার্থীদের জন্য আছে ১৪টি আবাসিক হল। বিশ্ববিদ্যালয়টি অনেক গুণীজনের জন্ম দিয়েছে, যেমন নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, অধ্যাপক ড. জামাল নজরুল ইসলাম, সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. অনুপম সেনসহ অনেকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেন শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম। দীর্ঘ ৪০ বছরের ইতিহাসের এই ট্রেন সম্প্রতি নতুন দুটি বগি যুক্ত করলেও ভোগান্তি ও অব্যবস্থাপনার সমস্যা এখনো চলমান।
চবিতে পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০২৫ সালে, যেখানে প্রায় ২২ হাজার শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়। লাইব্রেরি, যা ১৯৬৬ সালে ৩০০ বই নিয়ে শুরু হয়েছিল, বর্তমানে প্রায় ৩ লাখ বই ও বিভিন্ন গবেষণার উপকরণ সংরক্ষণ করছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলন ও সংগ্রামে সুপরিচিত। স্বাধীনতা যুদ্ধ, ১৯৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন এবং ২০২৪-এর জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও শিক্ষার্থীরা নানামুখী সংকটের মুখোমুখি। শাটল ট্রেনের অপ্রতুলতা, সেশনজট, প্রশাসনিক জটিলতা, হলে খাবার ও আবাসনের সীমাবদ্ধতা শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন জীবনকে প্রভাবিত করছে।
শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা হচ্ছে, শাটল ও প্রশাসনিক সেবা আধুনিক ও কার্যকর করা হবে, সেশনজট দূর হবে, হলে খাবার ও আবাসনের মান উন্নত হবে এবং লাইব্রেরি ও পরিবহন ব্যবস্থাকে শিক্ষার্থী-বান্ধব করা হবে। তারা চায় একটি জবাবদিহিমূলক ও কার্যকর প্রশাসন, যা তাদের শিক্ষাজীবনকে সহজ ও সুষ্ঠু করবে।