লোহাগাড়া থেকে মোঃ ইউসুফঃ
নাম পরিবর্তন হয়ে অতীতের টঙ্কাবতী খাল বর্তমানে টঙ্কাবতী নদী নামে নামকরণ হয়। আঁকাবাঁকা গতিপথে অত্র আমিরাবাদ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ইউনিয়নের পশ্চিম সীমানা দিয়ে বয়ে যাওয়া খরস্রোতা ডলু নদীর সহিত তিন খালের মুখ নামক স্থানে সংযুক্ত হয়েছে। স্থানটি তৎকালীন অবিভক্ত সাতকানিয়া থানাধীন দক্ষিণ সাতকানিয়ার এ মোহনাটি তিন খালের মুখ নামে পরিচিতি লাভ করে। এর ভৌগলিক অবস্থান আমিরাবাদ ইউনিয়নের অন্তর্ভূক্ত। নদীটি উত্তর আমিরাবাদস্থ বিশাল জনগোষ্ঠী এলাকা অতিক্রম করে তিন খালের মোহনায় শেষ হয়েছে। বিশেষ করে উক্ত জনগোষ্ঠী এলাকায় নদীর পূর্বকূলে রয়েছে মীরপাড়া, তালুকদার পাড়া এবং তৎসংলগ্ন রয়েছে বিশাল আয়তনবিশিষ্ট হিন্দু পাড়া। এ ছাড়া রয়েছে স্কুল,কলেজ,মাদরাসা,চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আরকান সড়ক ও বহুল পরিচিত পদুয়া তেওয়ারী হাট এবং বাজার। নদীর পশ্চিম কূলে রয়েছে ঘোনা পাড়া, মুহরী পাড়া, আমীর খাঁন চৌধুরী পাড়া, রাহাত আলী পাড়া, নব নির্মিত খেলার মাঠসহ দূর-দূরান্তের অন্যান্য জনবসতি এলাকাসমূহ। বিশেষ করে খেলার মাঠের কারণে লোকজনের যাতায়াত ও বাড়বে আগামীতে। কিন্তু নদী পারাপারে ভোগান্তির শিকার হবে এলাকাবাসী। সামনে জমবে অসংখ্য ক্রীড়ামোদী দর্শক ও নামী-দামী খেলোয়াড়দের জমজমাট আসর। তাঁদেরকে এ’স্থানে টঙ্কাবতী নদী পেরিয়ে আসা-যাওয়া করতে হবে। যে কারণে উক্ত এলাকায় সুবিধে মতো স্থানে টঙ্কাবতী নদীর উপর একটি ব্রীজ অবশ্যক। বিশাল জনগোষ্ঠীর লোকজন ও শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন যাবৎ এ স্থানে নদী পারাপারে ভোগান্তির শিকার হয়ে আসছে বলে উভয় দিকের কূলবাসী জানিয়েছেন। এ’ছাড়া বিভিন্ন কাজ-কর্মে প্রতিনিয়ত এক কূলের লোক অন্য কূলে যাতায়াত করেন। এমনকি প্রতিদিন শিক্ষার্থীরা, চট্টগ্রাম শহর ও কক্সবাজার যাত্রামুখী লোকজন এ নদী পারাপার হন। এ’ছাড়া হাট-বাজারমুখী অসংখ্য লোকজন পশ্চিম কূলে থেকে পূর্বকূলে আসেন। নদীতে কোন ব্রীজ উক্ত এলাকায় বা আশে-পাশের কোন স্থানে না থাকায় গ্রীষ্ম ও বর্ষা উভয় মৌসুমে নদী পারাপারের সমস্যায় মারাত্মকভাবে দূর্গতির সম্মুখীন হন উভয় দিকের লোকজন। সম্প্রতি এলাকা পরিদর্শনকালে স্থানীয় লোকজন আরো জানিয়েছেন, তাঁরা নদী পারাপার সমস্যায় বেশী ভোগান্তির শিকার হন বর্ষাকালে। বন্যার অথৈ পানিতে প্লাবিত হয়ে কূল উঁপচে নিন্মঞ্চলের দিকে পানি গড়িয়ে পড়ে। নেহায়েত প্রয়োজনে নৌকাযোগে কূলবাসীকে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার হতে হয় এবং শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ও ওই সময় ব্যাহত হয়। মহুরী পাড়ার বাসীন্দা সাহাব উদ্দীন জানান, উল্লেখিত এলাকায় টঙ্কাবতী নদীর উপর একটি ব্রীজ নির্মাণের জন্য উভয় কূলের জনগণ দীর্ঘ বহু বছর যাবৎ সরকারের নিকট দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু তাঁদের দাবি আজো পূরণ হয়নি। ফলে, গ্রীষ্মকালে নদী পারাপারে স্থানীয়রা তালুকদার পাড়া ও মুহরী পাড়া সংযোগস্থলে নিজেদের আর্থিক ব্যয়ে কাঠ-বাঁশের তালিজোড়া দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করে পারাপার হন। পরিদর্শনকালে আরো দেখা গেছে, আনুমানিক আঁধা কিলোমিটার ব্যবধানে খালেকের দোকানের পশ্চিমদিকগামী সড়কের শেষ মাথায় মজুমদার পাড়া সংলগ্ন স্থানে জনগণ পারাপারের জন্য নিজেদের আর্থিক ব্যয়ে অপর একটি সাঁকো নির্মাণ করেছেন। লোকজন জানান, বর্ষাকালে বানের পানির প্রবল স্রোতের ধাক্কায় এ সব সাঁকো লন্ডভন্ড হয়ে যায়। এ’প্রসঙ্গে স্থানীয় বিএনপি নেতা সাহাব উদ্দীন’র সাথে মুঠো ফোনে আলাপ করলে তিনি জানান, উক্ত এলাকায় টঙ্কবতী নদী পারাপারে একটি ব্রীজ নির্মাণ হলে অসংখ্য লোকজন উপকৃত হবেন।
একই প্রসঙ্গে উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ ইফরাদ বিন মুনির বলেন, সেতুটি বর্তমানে এলজিইডির কোন প্রকল্পের ডিপিপিতে অন্তর্ভূক্ত নেই। এই সেতু সংক্রান্ত প্রতিবেদন তিনি অতিদ্রুত নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবরে প্রেরণ করবেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ইনামুল হাছান বলেন, জনগণের দূর্ভোগের কথা মাথার রেখে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক : সাইফুল আলম সিদ্দিকী
সম্পাদকীয় ও বার্তা : ৩২১, নবাব সিরাজউদ্দৌলা সড়ক , দিদার মার্কেট, দেওয়ান বাজার, চট্টগ্রাম।
ফোন : +৮৮০২৩৩৩৫৪৪৫৮, মোবাইল : +৮৮০১৮৪২-৭৯৭৩১৫
Copyright © 2023 দৈনিক পূর্বতারা. All rights reserved.