সাবেক সংসদ সদস্য বেগম রোজী কবিরের মৃত্যু

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এবং সাবেক সংসদ সদস্য বেগম রোজী কবির মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বুধবার (১৩ নভেম্বর) ভোর ৫টায় ঢাকা এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তার মৃত্যু হয়।

জানা গেছে, বেগম রোজী কবির দীর্ঘদিন ধরে লিভারজনিত রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। তিনি ২ ছেলে, ২ মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী, আত্মীয় স্বজন ও রাজনৈতিক সহকর্মী রেখে গেছেন। ঢাকা থেকে লাশ চট্টগ্রাম নেওয়ার পর জানাজার সময় নির্ধারণ করা হবে।

বেগম রোজী কবির জাতীয়তাবাদী মহিলা দল চট্টগ্রাম নগর কমিটির সভাপতি, মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারীসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন সম্পাদকীয় পদে দায়িত্ব পালন করেন।

রোজী কবিরের রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয় বড় ভাই সাবেক ডেপুটি স্পিকার ও পরিকল্পনামন্ত্রী ব্যারিস্টার সুলতান আহমেদের হাত ধরে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী হিসেবে তিনি থাইল্যান্ড, চীন, ইন্ডিয়া, শ্রীলংকা,  ডেনমার্ক,  যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রীয় সফরের পাশাপাশি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ সভা বিমস্টেক, সার্কের মতো গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনে বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

বেগম রোজী কবির চট্টগ্রাম নগরীর উত্তর হালিশহরের প্রখ্যাত জমিদার পরিবার আজগর আলী চৌধুরী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

এদিকে বেগম রোজী কবিরের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি এক শোক বার্তায় মরহুমের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।

বেগম রোজী কবিরের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মেয়র ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বেগম রোজী কবিরের মৃত্যুতে আমি গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছি। মরহুমা বেগম রোজী কবির ছিলেন গণমানুষের কল্যাণের জন্য নিবেদিত একজন নেত্রী। রাজনীতিতে তার বলিষ্ঠ ভূমিকা দলীয় নেতাকর্মীদের সবসময় অনুপ্রেরণা জোগাবে। দেশ ও দলের স্বার্থে নিষ্ঠাসহকারে দায়িত্ব পালনে তার কর্মকাণ্ড নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। নিজস্ব মতাদর্শে তিনি ছিলেন নির্ভিক ও প্রত্যয়দৃঢ়। তার কর্মময় জীবনের সাফল্যের মূলে ছিল আদর্শনিষ্ঠ উদ্যম ও উদ্যোগ। জনঘনিষ্ঠ ও কর্মীবান্ধব রাজনীতিবিদ হওয়ার কারণেই তিনি জনগণ ও দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নিকট ছিলেন অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব। সমাজকল্যানমূলক কাজকেই তিনি সবসময় অগ্রাধিকার দিয়েছেন। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক গভীর শুণ্যতার সৃষ্টি হলো। আমরা একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক নেত্রীকে হারালাম।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন,বেগম রোজী কবিরের মৃত্যুতে আমি গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছি। মরহুমা বেগম রোজী কবির ছিলেন গণমানুষের কল্যাণের জন্য নিবেদিত একজন নেত্রী। রাজনীতিতে তার বলিষ্ঠ ভূমিকা দলীয় নেতাকর্মীদের সবসময় অনুপ্রেরণা জোগাবে। দেশ ও দলের স্বার্থে নিষ্ঠাসহকারে দায়িত্ব পালনে তার কর্মকাণ্ড নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। নিজস্ব মতাদর্শে তিনি ছিলেন নির্ভিক ও প্রত্যয়দৃঢ়। তার কর্মময় জীবনের সাফল্যের মূলে ছিল আদর্শনিষ্ঠ উদ্যম ও উদ্যোগ। জনঘনিষ্ঠ ও কর্মীবান্ধব রাজনীতিবিদ হওয়ার কারণেই তিনি জনগণ ও দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নিকট ছিলেন অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব। সমাজকল্যাণমূলক কাজকেই তিনি সবসময় অগ্রাধিকার দিয়েছেন। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক গভীর শূন্যতার সৃষ্টি হলো।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) মেয়র ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন শোকবার্তায় বলেছেন, ‘বেগম রোজি কবিবের মৃত্যুর সংবাদ ছিল আমার জন্য ভীষণ কষ্টের। বিএনপির রাজনীতিতে তিনি ছিলেন একজন সৎ, ত্যাগী ও নিবেদিতপ্রাণ নেতা। বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে চট্টগ্রামে দলকে সুসংগঠিত করতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। সংসদ সদস্য থাকাকালীন সময়ে চট্টগ্রামের উন্নয়নে তিনি কাজ করে গেছেন। স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে তার ভূমিকা ছিল অপরিসীম। তিনি গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার একদফার আন্দোলনে সাহসী নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি ছিলেন দল-অন্তঃপ্রাণ নেতা। চট্টগ্রামে বিএনপির রাজনীতিতে তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।’