সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিশুদের ক্ষতির জন্য জাকারবার্গ দায়ী নন

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতির জন্য মেটার প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গকে ব্যক্তিগতভাবে দায়ী না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এক ফেডারেল বিচারক।

বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) ক্যালিফোর্নিয়ার ওকল্যান্ডে ইউএস ডিস্ট্রিক্ট বিচারক ইভন গনজালেস রজার্স এ সিদ্ধান্ত দেন এবং জাকারবার্গের বিরুদ্ধে দায়ের করা ২৫টি মামলার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন। খবর রয়টার্স।

এ বিষয়ে প্রতিবেদন থেকে জানা যায়,চলতি বছরের জানুয়ারিতে মার্কিন সিনেটের সদস্যরা যখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিশুদের আসক্তি এবং তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব নিয়ে কঠোর প্রশ্ন তুলেছিলেন। তখন জাকারবার্গসহ অন্যান্য প্ল্যাটফর্মের কর্মকর্তারা শোচনীয় অবস্থার সম্মুখীন হন। একপর্যায়ে শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করে জাকারবার্গকে ক্ষমাও চাইতে হয়েছিল।

এছাড়া জাকারবার্গের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তিনি ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টি গোপন করতে মেটার প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন। বাদীপক্ষ মেটার সহ-প্রতিষ্ঠাতা জাকারবার্গকে ‘গোপন প্রচেষ্টার মূল অনুপ্রেরণা’ হিসেবে উল্লেখ করে অভিযোগ করেন যে, তিনি অভ্যন্তরীণ সতর্কতা সত্ত্বেও এই ঝুঁকি উপেক্ষা করেছেন।

এ বিষয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী প্রিভিন ওয়ারেন বলেন, তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব ও নিরাপত্তা নিয়ে আরো প্রমাণ সংগ্রহ করতে চেষ্টা চালিয়ে যাবেন। যাতে এটি স্পষ্ট হয়ে উঠতে পারে কিভাবে মেটা শিশুদের নিরাপত্তার চেয়ে তাদের ব্যবসায়িক লাভকে গুরুত্ব দিয়েছে।

অপরদিকে জাকারবার্গ সিনেটরদের বলেন, ‘ইন্টারনেটের শুরু থেকেই শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল এবং অপরাধীরা তাদের কৌশল পরিবর্তন করেছে। আমাদেরও পণ্যগুলোর নিরাপত্তা আপডেট করতে হয়েছে।’

অন্যদিকে, টিকটকের সিইও শাও জি চিউ তার তিনটি সন্তান থাকার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তা অত্যন্ত ভয়ংকর এবং প্রতিটি বাবা-মায়ের জন্য দুঃস্বপ্নের মতো।’ তিনি যোগ করেন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে ২০০ কোটি ডলার খরচ করা হবে এবং চলতি বছরেই তাদের ৪০ হাজার কর্মী সুরক্ষার জন্য কাজ করবেন।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে মেটার বিরুদ্ধে এমন একাধিক মামলা চলমান রয়েছে। এ মামলাগুলোতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোকে উদ্বেগ, হতাশা, অনিদ্রা এবং দৈনন্দিন জীবনে নানা ধরনের বাধা সৃষ্টি করার জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে।