দেশের মানুষ নতুন সিন্ডিকেট চায় না: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

পুরোনো সিন্ডিকেটের স্থলে দেশের মানুষ নতুন সিন্ডিকেট চায় না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

আজ শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির জনশুনানিতে তিনি একথা বলেন।

এ সময় দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমরা দেখেছি বিগত সময়ে সচিবরা কীভাবে ব্যবসায়ী হয়ে গেলেন এবং ব্যবসায়ীরা কেমন করে রাজনীতিবিদ হয়ে গেলেন। অনেকে মনে করেন, কেবল ব্যবসায়ীরাই রাজনীতিবিদ হয়নি, রাজনীতিবিদরাও ব্যবসায়ী হয়ে গেছেন।’

দেশ একটা নতুন পরিস্থিতির ভেতর আছে উল্লেখ করে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘যারা আত্মত্যাগ করেছেন তাদের যে পরিবর্তনের চিন্তা, সংস্কারের চিন্তা এটা হলো সেটিই- আমরা এক অত্যাচারের বদলে আরেক অত্যাচারীকে দিয়ে বিকল্প হিসেবে দেখছি না। রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গই কোনো না কোনোভাবে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে। যাদের আইন প্রণয়ন করা কথা তারা দুর্নীতিতে যুক্ত হয়ে গেছে। যাদের আইনের সুরক্ষা দেওয়ার কথা তারাও দুর্নীতিতে যুক্ত হয়ে গেছে।’

শ্বেতপত্র প্রস্তুতি কমিটির সদস্যদের মধ্যে ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক এ কে এনামুল হক, বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড) সিইও ফেরদৌস আর বেগম, ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অফ গভারন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট নির্বাহী পরিচালক ড. ইমরান মতিন, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) গবেষণা পরিচালক ড. কাজী ইকবাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, সিপিডি সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র প্রণয়নের লক্ষ্যে অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে প্রধান করে গত ২৮ আগস্ট একটি কমিটি গঠন করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। কমিটিকে ৯০ দিনের মধ্যে সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার নিকট হন্তান্তর করার কথা রয়েছে। সে অনুযায়ী কাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

জনশুনানিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন অংশ নেন। এ সময় বক্তারা নাগরিক সেবার ভোগান্তি, জনসম্পৃক্ততা ছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়ন, নাগরিক সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে ঘুষ বাণিজ্য, আদিবাসীদের আত্মপরিচয় ও তাদের নাগরিক অধিকার, পর্যটনের অভিঘাত, শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থান ও কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিসহ নানা বিষয়ে আলোচনা করা হয়।