চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এক শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ১১৬ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু এবং অপর ২২০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। চীনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সোমবার মধ্যরাতে দেশটির গানসু প্রদেশে ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে এবং এর ফলে প্রতিবেশ কিনঘাই প্রদেশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে অনেক উঁচুতে অবস্থিত বলে ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকাগুলোতে প্রচণ্ড শীত পড়েছে এবং এই ঠাণ্ডার মধ্যে উদ্ধারকাজ চালাতে সরকারি কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবীদের বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। হতাহতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।
প্রথম ভূমিকম্পের পর প্রতিবেশী শিনজিয়াং প্রদেশে আজ (মঙ্গলবার) ভোররাতে দ্বিতীয় ভূমিকম্প আঘাত হানে। তবে ৫.৫ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির দৃশ্য এখনও স্পষ্ট নয়।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দেশটির অন্যতম দারিদ্রপীড়িত গানসু প্রদেশে পূর্ণ মাত্রায় উদ্ধার তৎপরতা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আহতদের যথাসম্ভব দ্রুত উদ্ধার করে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। ভূমিকম্পে প্রদেশের জিশিশান জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকাগুলো থেকে পাওয়া ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, উদ্ধারকর্মীরা বিধ্বস্ত ভবনগুলোর নীচে হতাহতদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছেন এবং হাসপাতালগুলোতে দলে দলে আহত ব্যক্তিদের আনা হচ্ছে।
দ্য ইউরোপিয়ান মেডিটেরিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টার (ইএমএসসি) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল গানসু প্রদেশের রাজধানী লানঝোর ১০২ কিলোমিটার পশ্চিম–দক্ষিণপশ্চিমে, ভূপৃষ্ঠের ৩৫ কিলোমিটার গভীরে। ভূমিকম্পের পর কয়েকবার ভূকম্পণ (আফটারশক) অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্প আঘাত হানার পর কিছু গ্রামে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এর আগে চীনের পূর্বাঞ্চলে গত আগস্ট মাসে ৫ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে কেউ নিহত না হলেও ২৩ জন আহত হয়। ধসে পড়ে বেশ কিছু ভবন। এরপর সেপ্টেম্বরে চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সিচুয়ান প্রদেশে ৬ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে ৬০ জনের বেশি মানুষ মারা যায়।