শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫

চাকসু প্রচারণায় নারী প্রার্থীদের বাজিমাত

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ : ২ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:০৮

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে উৎসবমুখর ক্যাম্পাস। সরাসরি প্রচারণার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও জমে উঠেছে নির্বাচনি আমেজ। এ দৌড়ে বাজিমাত করছেন নারী প্রার্থীরা।

আবাসিক হল, শাটল ট্রেন কিংবা ক্যাম্পাসের আড্ডা— সর্বত্রই তাদের উপস্থিতি চোখে পড়ছে। নানা কৌশল ও ভিন্নধর্মী প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের আকর্ষণ করছেন তারা। তবে অনলাইন ও অফলাইনে প্রচারণায় ব্যাপক সাড়া পেলেও সাইবার বুলিং, স্লাটশেমিং, ট্যাগিং ও ভুয়া ফ্রেমিংয়ের মতো নেতিবাচক অভিজ্ঞতার শিকারও হচ্ছেন নারী প্রার্থীরা।

ভিপি পদে কোনো নারী না থাকলেও জিএস, এজিএস এবং ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদকীয় পদগুলোতে আছেন কয়েকজন আলোচিত মুখ। জিএস পদে বিনির্মাণ শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের চৌধুরী তাসনীম জাহান শ্রাবণ। এজিএস পদে: ছাবেকুন নাহার এবং জান্নাতুল ফেরদৌস (স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন)। ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৩ জন, আর সহ-সম্পাদক পদে ১০ জন নারী প্রার্থী।

সবচেয়ে আলোচিতদের মধ্যে আছেন সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোটের নাহিমা আক্তার দ্বীপা, তাহসিনা রহমান, জান্নাতুল আদন নুশরাত, জান্নাতুল ফৈরদাউস রিতা ও সানজিদা, ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলের শ্রুতিরাজ চৌধুরী ও শাফকাত শফিক, স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলনের সারাহ চৌধুরী ও মারিয়া আলম, সচেতন শিক্ষার্থী সংসদের মারজান বেগম, ভয়েস অব সিইউ প্যানেলের মুসলেমা খানম আঁখি।

সারাহ চৌধুরী (স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন) বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের কাছে যাচ্ছি। অনলাইন প্রচারণায় ভালো সাড়া পাচ্ছি। তবে নারী প্রার্থীরা সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছেন, প্রশাসনের কার্যকর ব্যবস্থা জরুরি।’

মারজান বেগম (সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ) বলেন, ‘প্রতিটি ছাত্রীই আমার বোন। তাদের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষার জন্যই আমার নির্বাচন করা। শিক্ষার্থীদের ভালোবাসা ও সমর্থন পেলে স্বপ্নের ক্যাম্পাস বিনির্মাণ করতে পারব।’

জান্নাতুল ফৈরদাউস রিতা (সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট): ‘ক্যাম্পাস এখন বন্ধ থাকায় উপস্থিতি কম। তবে যাদের টিউশন বা পরীক্ষা আছে, তাদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি। আমরা ভালো সাড়া পাচ্ছি।’

চাকসু নির্বাচনের প্রচারণায় নারী প্রার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নতুন মাত্রা যোগ করেছে। নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও মৌলিক চাহিদার মতো ইস্যুকে সামনে রেখে তাদের প্রচারণা শিক্ষার্থীদের মন ছুঁয়ে যাচ্ছে। তবে নির্বাচনি প্রচারণার মাঠে সমান সুযোগ নিশ্চিত করা এবং সাইবার হয়রানি থেকে রক্ষা পাওয়াও এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

নারী প্রার্থীদের ইশতেহারে প্রাধান্য পাচ্ছে যেসব বিষয়
নারী প্রার্থীদের নির্বাচনি অঙ্গীকারে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে নিরাপদ ক্যাম্পাস ও মৌলিক চাহিদা নিশ্চিতকরণ। তাদের মূল প্রতিশ্রুতির মধ্যে রয়েছে— ক. মাতৃত্বকালীন ছুটি ও বিশেষ সুবিধা নিশ্চিতকরণ, খ. স্যানিটারি ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন, গ. প্রাথমিক চিকিৎসা ও জরুরি সেবা সহজপ্রাপ্য করা, ঘ. নারী পরিচ্ছন্নতা কর্মী বৃদ্ধি, ঙ. সাইবার বুলিং প্রতিরোধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা, চ, যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেল সক্রিয়করণ, ছ. শাটল ট্রেনে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা বগি।

ভিডিও