ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির চুক্তি বাস্তবায়নে লেবাননের যে কোনো সিদ্ধান্তকে সমর্থন দেবে ইরান। গতকাল শুক্রবার বৈরুত সফরে এই মন্তব্য করেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির উপদেষ্টা আলি লারিজানি। তার এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে তেহরানের পক্ষ থেকে এ সংঘাত থামানোর ইঙ্গিত দেওয়া হলো।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার লেবানন পার্লামেন্টের স্পিকার নাবিহ বেরির কাছে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির খসড়া প্রস্তাব দেন লেবাননে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত।
এ খসড়া প্রস্তাবটি ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যকার সংঘাত থামাতে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া প্রথম লিখিত প্রস্তাব। যদিও এই প্রস্তাবে কী আছে তার বিস্তারিত এখনো জানা যায়নি। তবে খসড়া এ প্রস্তাবে হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে লেবানন পার্লামেন্টের স্পিকারকে ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনার জন্য সমর্থন দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি লেবাননে তেল আবিবের আগ্রাসনের মাত্রা আরও জোরদার হয়েছে। ইসরায়েলের লাগাতার হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে হিজবুল্লাহ। এমন পরিস্থিতিতে মিত্রদের বাঁচাতেই হয়ত যুদ্ধ বন্ধের চিন্তা করছে তেহরান।
বৈরুতে লেবাননের স্পিকারের সঙ্গে সাক্ষাতের পর লারিজানি বলেন, স্পিকার আমাকে খসড়া প্রস্তাব সম্পর্কে ভালোভাবে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। আমি যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবের লাগাম টেনে ধরতে আসিনি। বরং লেবাননের সিদ্ধান্তকেই স্বাগত জানাতে চাই। তিনি বলেন, যে কোনো পরিস্থিতিতেই ইরান লেবানন সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাবে।
যুদ্ধ বিরতির এই আলোচনার মধ্যেও লেবাননে ব্যাপক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। শুক্রবার রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলির একাধিক ভবনে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি যুদ্ধ বিমান। এতে বেশ কয়েক জন হতাহত হয়েছেন।
ঘটনাস্থল থেকে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা গেছে, প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে এবং ভবনগুলো ধসে পড়ছে। দাহিয়েহ ও তাইয়ুনেহ এলাকাসহ অন্যান্য এলাকায় বড় ধরনের হামলা চালানো হয়েছে।
গত বছরের অক্টোবরে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকেই লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে সংঘাত চলছে। তবে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে লেবাননে হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
তবে হিজবুল্লাহও পাল্টা আঘাত হানছে। লেবাননে যুদ্ধরত ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সদস্যদের হত্যার পাশাপাশি ইসরায়েলের বেশ গভীরে সামরিক ঘাঁটিতে অত্যাধুনিক মিসাইল দিয়ে হামলা চালাচ্ছে ইরান সমর্থিত শক্তিশালী এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটি।