শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫

১২ অক্টোবর ভোটগ্রহণ

চাকসু নিয়ে ক্যাম্পাসজুড়ে উৎসব, আলোচনায় ৮ প্যানেল

ইফতেখার ইসলাম

প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:০৭
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নির্বাচন উৎসব, এবার পালা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালেয়ের।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দীর্ঘ অনিশ্চয়তার পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই আয়োজনকে সামনে রেখে ক্যাম্পাসজুড়ে চলছে উৎসবের আমেজ। হল, ঝুপড়ি, ক্যাফেটেরিয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাকাল্টিগুলো এবং বিভিন্ন সংগঠনে সংগঠনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে এই নির্বাচন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাহিরেও বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে চাকসু নির্বাচন পাচ্ছে বাড়তি গুরুত্ব। সব মিলিয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের এই উৎসবে মেতেছে পাহাড়-সবুজের চবি ক্যাম্পাস।

গত রবিবার মনোনয়নপত্র বিতরণের প্রথম দিনেই ক্যাম্পাসে তৈরি হয়েছে নির্বাচনী আমেজ। মোট ২৭ জন শিক্ষার্থী ফরম সংগ্রহ করেছেন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ১২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে ভোটগ্রহণ। সেই লক্ষ্যে প্রার্থী বাছাই, প্রচারণার কৌশল নির্ধারণ এবং জোটবদ্ধ হওয়ার প্রস্তুতিতে এখন ব্যস্ত শিক্ষার্থীরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবারের নির্বাচনে অন্তত আটটি পূর্ণাঙ্গ প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে। পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অংশগ্রহণের সম্ভাবনাও রয়েছে।

চাকসু নির্বাচনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে যারা

জানা গেছে, ইসলামী ছাত্রশিবির এবারের নির্বাচনে নারী, উপজাতি, ভিন্নধর্মাবলম্বী ও আহত শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি সমন্বিত প্যানেল গঠন করেছে। ডাকসু ও জাকসুর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে শিবির নেতৃত্ব এবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও সাফল্যের প্রত্যাশা করছে। অন্যদিকে ছাত্রদল অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও নেতৃত্ব বণ্টন নিয়ে জটিলতায় পড়েছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় কারা প্রার্থী হবেন তা নিয়ে তাদের ভেতরে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। যদিও ভিপি ও জিএসসহ শীর্ষ পদে কয়েকজন নাম আলোচনায় এসেছে।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) অভ্যন্তরীণ বিভাজনের কারণে দুটি পৃথক প্যানেল গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। একদিকে চবি শাখার আহ্বায়ক মুনতাসির মাহমুদ ও তার সহযোগীরা, অন্যদিকে কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে আরেকটি প্যানেল ঘোষণা করা হতে পারে। এতে নারী শিক্ষার্থী ও নতুন মুখ রাখার পরিকল্পনাও রয়েছে।

আরও পড়ুন: চাকসু নির্বাচনের আচরণবিধি প্রকাশ

বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলো এবারও সক্রিয়। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট যৌথভাবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতিমধ্যে তারা ভিপি, জিএস ও এজিএসসহ শীর্ষ পদে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী ও গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলও আলাদা প্যানেল ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

চাকসু নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু

ছাত্র অধিকার পরিষদ এবারের নির্বাচনে ‘চাকসু ফর রেপিড চেঞ্জ’ নামের একটি একক প্যানেল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে প্রয়োজনে জোট গঠনেরও সুযোগ খোলা রেখেছে সংগঠনটি। ইসলামী ছাত্র আন্দোলনও পিছিয়ে নেই। তারা ‘সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ’ নামের একটি পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেছে, যেখানে ভিপি ও জিএসসহ বিভিন্ন পদে প্রার্থী নির্ধারণ করা হয়েছে।

সব মিলিয়ে ছাত্রশিবিরের ইনক্লুসিভ কৌশল, ছাত্রদলের অপ্রস্তুত অবস্থান, বাগছাসের দ্বন্দ্ব এবং বাম সংগঠনগুলোর সক্রিয় উপস্থিতি এবারের চাকসু নির্বাচনকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক কৌতূহল তৈরি করেছে।


আরও পড়ুন: একটি পক্ষ চাকসু নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে, অভিযোগ

নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব এ কে এম আশরাফুল হক সিদ্দিকী বলেন, কেন্দ্রীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র নিতে ৩০০ টাকা ফি দিতে হবে। আর হল সংসদের মনোনয়নপত্র নিতে ২০০ টাকা দিতে হবে। মনোনয়নপত্র নেওয়ার সময় অনলাইনে চূড়ান্ত ভোটার তালিকার প্রমাণ আর শিক্ষার্থীর ভোটার আইডি নম্বর দিতে হবে। এরপর পরিচয়পত্র দেখিয়ে মনোনয়ন নিতে হবে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় প্রার্থীকে তার পরিচয়পত্র, ছবি এবং ডোপ টেস্টের ফলাফল নিয়ে আসতে হবে। এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য মনোনয়নপত্রেও দেওয়া থাকবে।

চাকসু নির্বাচনে ভোট দিবেন ২৭ হাজার ৬৩৪ শিক্ষার্থী

চাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধনপূর্বক দ্রুত তফসিল ঘোষণার দাবি জানায় চবি ছাত্রদল।

চাকসু নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। এতে নতুন করে ১ হাজার ৭৬৮ শিক্ষার্থী যুক্ত হচ্ছেন। সে হিসেবে বর্তমানে চাকসুতে মোট ভোটার ২৭ হাজার ৬৩৪ জন। তবে এর মধ্যে ছাত্র কত এবং ছাত্রী কত, তা জানাতে পারেনি কমিশন। তবে সোমবার অথবা মঙ্গলবারের মধ্যে সে তালিকাও প্রকাশ করা হবে। এ তথ্য জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব এ কে এম আরিফুল হক সিদ্দিকী।

চাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আগামী ১৫ থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হবে। যাচাইুবাছাই হবে ১৮ সেপ্টেম্বর, প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ ২১ সেপ্টেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৩ সেপ্টেম্বর। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে ২৫ সেপ্টেম্বর। কেন্দ্রীয় সংসদের প্রতিটি মনোনয়ন ফরমের ফি ৩০০ টাকা এবং হল সংসদের জন্য ২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এবার চাকসুর গঠনতন্ত্রে পদ পরিবর্তন

নবযৌবনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের পদসমূহ নিয়ে গঠনতন্ত্রে আমূল পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন গঠনতন্ত্রে চাকসু থেকে চারটি সহ-সম্পাদকের পদ বাদ দিয়ে নতুন চারটি মূল পদ যুক্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে হল সংসদ থেকেও সব সহ-সম্পাদকের পদ বাতিল করা হয়েছে। তবে পদ সংখ্যার পরিবর্তন আনা হয়নি।

সংশোধিত গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সংসদের পদসমূহ: সভাপতি, সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ, খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক ও সহ-সম্পাদক, সাহিত্য-সংস্কৃতি সম্পাদক ও সহ-সম্পাদক, দপ্তর সম্পাদক ও সহ-সম্পাদক, সমাজসেবা ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, আইন ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, যোগাযোগ ও আবাসন সম্পাদক ও সহ-সম্পাদক, গবেষণা ও উদ্ভাবন সম্পাদক, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক, ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক ও সহ-সম্পাদক (নারী শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত), স্বাস্থ্য সম্পাদক, পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়া বিষয়ক সম্পাদক এবং ৫ জন নির্বাহী সদস্য।

সংশোধিত গঠনতন্ত্র অনুযায়ী হল সংসদের পদসমূহ: সভাপতি, সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ, খেলাধুলা সম্পাদক, সাহিত্য-সংস্কৃতি সম্পাদক, দপ্তর সম্পাদক, সমাজসেবা, পরিবেশ ও মানবাধিকার সম্পাদক, বিজ্ঞান, গবেষণা ও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক, স্বাস্থ্য সম্পাদক, রিডিংরুম, ডাইনিং ও হল লাইব্রেরি সম্পাদক, যোগাযোগ ও আবাসন সম্পাদক এবং ৫ জন নির্বাহী সদস্য।

চাকসুর ভিপি-জিএস ছিলেন যারা

শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মান, নাগরিক জীবনে সত্যিকারের নেতৃত্ব প্রদান ও অধিকার সম্পর্কে তাদের মতপ্রকাশের জন্য গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরপরই গঠিত হয়েছিল চাকসু।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী উপাচার্য পদাধিকারবলে চাকসুর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তবে সহসভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস), সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস)সহ বিভিন্ন সম্পাদক পদ সরাসরি শিক্ষার্থীদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে থাকে।

চাকসুর ইতিহাসে দেখা যায়, স্বাধীনতার আগে ১৯৭০ সালে প্রথম নেতৃত্বে নির্বাচিত হন মোহাম্মদ ইব্রাহিম ভিপি পদে এবং আব্দুর রব জিএস পদে। মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২ সালের নির্বাচনে ছাত্র ইউনিয়নের শমসুজ্জামান হীরা ভিপি এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মাহমুদুর রহমান মান্না জিএস নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৭৪ সালে ভিপি হন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) ছাত্রলীগের এসএম ফজলুল হক, আর জিএস পদে দায়িত্ব পান গোলাম জিলানী চৌধুরী।

পরবর্তী সময়ে ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে ভিপি নির্বাচিত হন জাসদ ছাত্রলীগের মাজহারুল হক শাহ চৌধুরী এবং জিএস পদে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের জমির চৌধুরী। ১৯৮১ সালে ইসলামী ছাত্রশিবির প্রথমবারের মতো চাকসুর নেতৃত্বে আসে। ভিপি হন জসিম উদ্দিন সরকার এবং জিএস পদে নির্বাচিত হন আবদুল গাফফার, দুজনই ছাত্রশিবিরের নেতা। সর্বশেষ ১৯৯০ সালের নির্বাচনে ভিপি পদে জাতীয় ছাত্রলীগের নাজিম উদ্দিন এবং জিএস পদে বাসদ ছাত্রলীগের আজিম উদ্দিন নির্বাচিত হন।

১৯৯০ সালের পর থেকে আর কোনো চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি সময় পেরিয়ে ২০২৫ সালে আবারও ভোটগ্রহণের আয়োজন করা হচ্ছে। ফলে এ নির্বাচন ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আগ্রহ ও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে চাকসু। ইতিহাসের ধারাবাহিকতা ভেঙে এতদিন পর হতে যাওয়া এই নির্বাচন ছাত্ররাজনীতিতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।

নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করবে: চবি উপাচার্য

চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন,

নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করবে। আমরা চাই এমন একটি নির্বাচন আয়োজন করতে, যা সবার কাছে উদাহরণ হয়ে থাকবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে যেকোনো সহযোগিতা দিতে আমরা প্রস্তুত।

উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, চাকসু নির্বাচন আমাদের কাছে জাতীয় নির্বাচনের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন কমিশন যেভাবে চাইবে আমরা সেইভাবে সব কার্যক্রম পরিচালনা করব। সবার আন্তরিকতা ও দায়িত্বশীলতা থাকলে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি স্বচ্ছ নির্বাচন উপহার দেওয়া সম্ভব হবে। তিনি জানান, নির্বাচনকেন্দ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ক্যাম্পাসে মোতায়েন থাকবে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রফেসর ড. মনির উদ্দিন বলেন, আমাদের লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব বিকাশের জন্য সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করা। তাই সবার আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন।

প্রসঙ্গত, ১৯৬৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরপরই গঠিত হয়েছিল চাকসু। শিক্ষার মান, শিক্ষার্থীদের মানসিক সংস্কৃতির বিকাশ, ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যকার পারস্পরিক সৌহার্দ্যবোধ ও রাষ্ট্রের দমনপীড়নের বিরুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা রাখার জন্যই গঠিত হয় এটি। প্রতিষ্ঠার পর প্রথম কেবিনেট নির্বাচন হয় ১৯৭০ সালে।

 গত ১৪ মে বিশ্বদ্যিালয়ের পঞ্চম সমাবর্তন উপলক্ষে ক্যাম্পাসে বসে প্রাণের মেলা। চাকসু নির্বাচনেও হতে পারে এমন উন্মাদনা!

ভিডিও