দীর্ঘ ৩৫ বছরের অচলাবস্থা কাটিয়ে আগামী ১২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। এরমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ১৭ দফা নির্বাচনী খসড়া আচরণবিধি প্রকাশ করেছে, যা প্রার্থী, ভোটার ও কর্মরত সাংবাদিকদের জন্য নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণার দিন থেকে ফলাফল প্রকাশ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
এই আচরণবিধি নিয়ে শিক্ষার্থীদের মতামত জানতে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ অডিটোরিয়ামে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে চাকসু নির্বাচন কমিশন। তবে সভায় অংশ নিলেও শেষ পর্যন্ত বর্জন করে বেরিয়ে যায় ছাত্রদল।
ছাত্রদলের অভিযোগ, মতবিনিময় সভায় শিক্ষার্থীদের মতামত দেওয়ার যথাযথ সুযোগ রাখা হয়নি। তাদের ভাষ্য, সভায় নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয় যে, কেউ একটির বেশি প্রশ্ন করতে পারবে না। শিক্ষার্থীদের কথা না শোনার এই আয়োজন আসলে মতবিনিময় সভা নয়।
তারা আরও অভিযোগ করেন, শিক্ষার্থীদের করা প্রশ্নের জবাব সরাসরি না দিয়ে নির্বাচন কমিশন তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দিকে ঠেলে দিয়েছে। এতে প্রমাণ হয় প্রশাসনের প্রতি আস্থা হারিয়েছে শিক্ষার্থীরা, আর নির্বাচন কমিশনও প্রশাসনের প্রভাবমুক্ত নয়। এমন পরিস্থিতিতে কথা বলার সুযোগ না থাকায় সভা বর্জন করে বেরিয়ে আসে ছাত্রদল।
ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘বিগত প্রশাসন যেভাবে শিক্ষার্থীদের কণ্ঠরোধ করেছে, আজ নির্বাচন কমিশনও একক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেখানে সুষ্ঠু নির্বাচন করা নিয়ে সারারাত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেছে, সেখানে কমিশন এক ঘণ্টার মধ্যেই সভা শেষ করে দিয়েছে।’
ছাত্রদলের আরেক নেতা জালাল সিদ্দিকী বলেন, ‘মতবিনিময় সভায় শিক্ষার্থীদের মতামত সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন করার সুযোগ সীমিত করেছে। যে কমিশন মত প্রকাশের আয়োজন করেও শিক্ষার্থীদের মতামত গ্রহণ করে না, সেই কমিশনের অধীনে চাকসু নির্বাচন আদৌ সম্ভব কি না, তা নিয়েও আমরা সন্দিহান।’
এ বিষয়ে চাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. আরিফুল হক সিদ্দিকী বলেন, ‘এটাই শেষ নয়, আমরা আরও মতবিনিময় সভা করব। আমরা যেটা বলেছি- গঠনতন্ত্র পরিবর্তনসহ যেসব সিদ্ধান্ত রয়েছে, সবকিছু পরিবর্তনের দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। তারা নির্বাচন কমিশনকে যেভাবে গঠনতন্ত্র তৈরি করে দেবে, সেভাবেই আমরা কাজ করব।’
এর আগে, গত ২৯ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে খসড়া আচরণবিধি প্রকাশ করা হলেও পরবর্তীতে সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে নির্বাচন কমিশন।