সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫

দুই লাল কার্ড ও পেনাল্টির ম্যাচে ইকুয়েডরের কাছে হার আর্জেন্টিনার

খেলা ডেস্ক

প্রকাশ : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:০৬

দক্ষিণ আমেরিকান অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে শেষটা ভালো হলো না আর্জেন্টিনার। গুয়াইয়াকিলে নিজেদের শেষ ম্যাচে স্বাগতিক ইকুয়েডরের কাছে ১-০ গোলে হেরেছে লিওনেল স্কালোনির দল।

দুই লাল কার্ড ও পেনাল্টির এ ম্যাচে লিওনেল মেসিকে পায়নি আর্জেন্টিনা। তাঁকে বিশ্রাম দিয়েছেন আর্জেন্টিনা কোচ স্কালোনি। সর্বশেষ ভেনেজুয়েলা ম্যাচের একাদশে পাঁচ পরিবর্তন এনে শেষটা ভালো করার চেষ্টা করেছিলেন স্কালোনি। কিন্তু ৩১ মিনিটে অধিনায়ক নিকোলাস ওতামেন্দির লাল কার্ড দেখা এবং প্রথমার্ধে যোগ করা সময়ের ১৩ মিনিটে পেনাল্টি থেকে ইকুয়েডর ফরোয়ার্ড এনের ভ্যালেন্সিয়ার গোলে হারের তেতো স্বাদ নিয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে আর্জেন্টিনাকে।

তবে বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে চিন্তা নেই আর্জেন্টিনার। সেটা নিশ্চিত হয়েছে আগেই। ১৮ ম্যাচে ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে দক্ষিণ আমেরিকান অঞ্চলের তালিকায় শীর্ষে থেকে এবারের বিশ্বকাপ বাছাই শেষ করল স্কালোনির দল। সমান ম্যাচে ২৯ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় আগেই বিশ্বকাপে খেলার টিকিট পাওয়া ইকুয়েডর।

পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। ডান প্রান্ত থেকে ভেসে আসা পাস আর্জেন্টিনার বক্সে দখলে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন নিকোলাস তালিয়াফিকো ও ইকুয়েডর ডিফেন্ডার অ্যাঞ্জেলো প্রিসিয়াদো। দুজনেই লাফ দিয়েছিলেন শূন্যে। আর্জেন্টিনার লেফট ব্যাক তালিয়াফিকোর কনুই গিয়ে লেগেছে প্রিসিয়াদোর মুখে। ভিডিও রিপ্লে দেখে মনে হয়েছে সেটা ইচ্ছাকৃত ছিল না। কলম্বিয়ান রেফারি উইলমার রোলদানও ফাউলের বাঁশি বাজাননি। কিন্তু ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) জানিয়ে দেয় ওটা পেনাল্টি! সোজাসুজি শটে আর্জেন্টিনা গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেজকে ফাঁকি দিয়ে গোল করেন ভ্যালেন্সিয়া।

খেলা শুরুর প্রথম ১৫ মিনিটে দুটি পরিস্কার গোলের সুযোগ পেয়েছে ইকুয়েডর। মার্তিনেজের দৃঢ়তায় একবার রক্ষা পায় আর্জেন্টিনা। একটু সময় নিয়ে খেলা গুছিয়ে নিলেও গোলের সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি। প্রথমার্ধে ইকুয়েডরের পোস্টে লাওতারো মার্তিনেজ, জুলিয়ানো সিমিওনে ও নিকোলাস গঞ্জালেসরা কোনো শট রাখতে পারেননি।

৫০ মিনিটে ইকুয়েডর মিডফিল্ডার ময়জেস কাইসেদো লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ার পর খেলাটা দশজন বনাম দশজনের সমতায় ফেরে। নিকোলাস গঞ্জালেসকে অবৈধ ট্যাকল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন কাইসেদো। গ্যালারি থেকে তা দেখে নিশ্চয়ই ভালো লাগেনি কাইসেদোর মা কারমেন কোরোজোর! এই ম্যাচে আমন্ত্রিত হয়ে আসা কোরোজোর কাছ থেকে ম্যাচের বল নিয়েই খেলা শুরু করেন রেফারি।

ইকুয়েডর ফরোয়ার্ড ভ্যালেন্সিয়া ও নিলসন আঙ্গুলা প্রথমার্ধে তিনটি শট করেন আর্জেন্টিনার পোস্টে। এই অর্ধে মাত্র ৪০ শতাংশ বল দখলে রাখা আর্জেন্টিনা বিরতির পর তুলনামূলক ভালো খেলেছে। মাঝমাঠে খেলা দাপটের সঙ্গে খেলে বক্সে ঢুকেছে। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে এই অর্ধেও ইকুয়েডরের পোস্টে শট নিতে পারেননি আর্জেন্টিনার কেউ! গোটা ম্যাচে আর্জেন্টিনার ৮টি শট নেওয়ার বিপরীতে ইকুয়েডর শট নিয়েছে ১১টি, এর মধ্যে ৪টি পোস্টে ছিল।

২০০৯ সালে বিশ্বকাপ বাছাইয়েই বলিভিয়ায় ৬-১ গোলে হারের সেই বিপর্যয়ের পর এই প্রথম কোনো ম্যাচে লাল কার্ডের সঙ্গে পেনাল্টি হজম করল আর্জেন্টিনা। পরিস্থিতি পাল্টাতে ৬০ মিনিটের পর লিয়ান্দ্রো পারেদেস, মার্তিনেজ ও রদ্রিগো দি পলকে তুলে ফ্রাঙ্কো মাস্তানতুয়োনো, হুলিয়ান আলভারেজ ও জিওভান্নি লো সেলসোকে বদলি নামান স্কালোনি।

মেসির অনুপস্থিতিতে ১০ নম্বর জার্সি পরে নামা মাস্তানতুয়োনো ভীতি ছড়াতে পারেননি ইকুয়েডরের বক্সে। তবে মাস্তানতুয়োনোকে আরও আগে নামিয়ে তাঁকে খেলার আরও বেশি সময় দিয়ে স্কালোনি মাঝমাঠ আরও ভালো করতে পারতেন কি না, সেই প্রশ্ন উঠতে পারে। মাঝমাঠটা অ্যালেক্সিসব-ম্যাক অ্যালিস্টারের মূলত সামলোনোর দায়িত্ব থাকলেও প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি।

আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ইকুয়েডর এর আগে সর্বশেষ জিতেছিল ২০১৫ সালে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে। ব্রাজিলের পর দ্বিতীয় বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে আর্জেন্টিনাকে হারাল ইকুয়েডর। এই হারে ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ের পরবর্তী হালনাগাদ সংস্করণে শীর্ষস্থান হারাবে আর্জেন্টিনা। স্পেন ও ফ্রান্সের পর নেমে যাবে তিনে।

ভিডিও