রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক সংকট দূর করতে আসিয়ান জোটকে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাবেক ও বর্তমান সংসদ সদস্যদের সংগঠন আসিয়ান পার্লামেন্টারিয়ান ফর হিউম্যান রাইটস (এপিএইচআর)।
বৃহস্পতিবার (০৪সেপ্টেম্বর) রাজধানীর রিপোর্টাস ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানায় সংস্থাটি। এ সময় সংস্থাটির পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ভয়াবহ সংকটের বিষয়টি তুলে ধরা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে এপিএইচআর-এর বোর্ড সদস্য ও মালয়েশিয়ার সংসদ সদস্য ওং চেন বলেন, যেহেতু মিয়ানমার একটি আসিয়ান রাষ্ট্র, তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে আসিয়ান সদস্য রাষ্ট্রগুলোর একটি বাধ্যবাধকতা রয়েছে যে, তারা শরণার্থী শিবিরগুলোতে পর্যাপ্ত খাদ্য সহায়তা দেবে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির তথ্য অনুযায়ী, ইউএসএআইডি-র ব্যাপক তহবিল কাটছাঁটের কারণে চলতি বছরের নভেম্বরের শেষে খাদ্য রেশনের জন্য বাজেট উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে। শিবিরগুলোতে থাকা ১ দশমিক ৩ মিলিয়ন মানুষের জন্য প্রতি মাসে এক কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলারের প্রয়োজন।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ওং চেন আরও বলেন, রোহিঙ্গা সংকট কোনো বিচ্ছিন্ন সমস্যা নয়। রোহিঙ্গাদের বিষয়টি আসিয়ানের পরবর্তী সভায় তুলে ধরা হবে। এই সংকট আসিয়ান-সংশ্লিষ্ট বিষয়। দ্রুতই রোহিঙ্গা সংকট উত্তরণ না হলে আসিয়ান অঞ্চলের স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়বে। আসন্ন খাদ্য সংকট সমাধানে দ্রুত আসিয়ানকে একটি মানবিক তহবিল গঠন করতে হবে।
সংস্থার কো চেয়ার ও মালয়েশিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য চার্লস সান্তিয়াগো বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের আট বছর পেরিয়ে গেলেও আসিয়ান এখনো এটিকে নিজেদের সমস্যা হিসেবে দেখছে না। এপিএইচআর প্রথম ২০১৮ সালে এই বিষয়টি তুলে ধরেছিল। আজ আমরা আবারও মানবিক তহবিল গঠনের জন্য আসিয়ানরে কাছে আমাদের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করছি। যদি আসিয়ান মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে এর মূল্য হিসেবে মানব পাচার, অবৈধ বাণিজ্য এবং ক্রমবর্ধমান অস্থিতিশীলতা পুরো অঞ্চলকে বহন করতে হবে।
রোহিঙ্গা সমস্যার দ্রুত সমাধান না হলে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে জানিয়ে চার্লস সান্তিয়াগো বলেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন এই সংকটের একমাত্র সমাধান। এ বিষয়ে চীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এর আগে বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গাদের খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা সহায়তায় বিভিন্ন দেশের এগিয়ে আসা জরুরি। বিভিন্ন দেশ এগিয়ে না আসলে সামনে রোহিঙ্গারা চরম খাদ্য সংকট পড়তে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে এপিএইচআর-এর সদস্য ও ফিলিপাইনের সাবেক হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস সদস্য রাউল ম্যানুয়েলসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।