আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী— দুই দলের অবস্থানে স্পষ্ট বিভাজন তৈরি হয়েছে।
শনিবার (১ নভেম্বর) ঢাকায় এক আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচনের আগে আলাদাভাবে গণভোট আয়োজন সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয় এবং নির্বাচনের প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করার অপচেষ্টা মাত্র।’
তিনি জানান, বিএনপি দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়। তার ভাষায়, ‘যদি গণভোট করতেই হয়, তবে তা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই হওয়া উচিত— একটি ব্যালটে সংসদ সদস্যের ভোট, অন্যটিতে গণভোট।’
অপরদিকে, জামায়াতে ইসলামী ঠিক উল্টো অবস্থান নিয়েছে। শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) লন্ডনে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হলে জাতীয় নির্বাচন কোনোভাবেই কার্যকর হবে না। গণভোট আগে হতে হবে, না হলে নির্বাচনের দুই পয়সারও মূল্য নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের পর দেশের মানুষ ন্যায়বিচার ও বৈষম্যহীন সমাজ চেয়েছিল, কিন্তু দুর্নীতিবাজরা সব জায়গায় বসে থাকার কারণে সেই আশা পূরণ হয়নি।’
একদিকে বিএনপি যেখানে দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে সরকারের পদত্যাগ ও তিন মাসের মধ্যে ভোট চায়, অন্যদিকে জামায়াত বলছে— গণভোট ছাড়া সেই নির্বাচন অর্থহীন।
মির্জা ফখরুল এদিন আরও অভিযোগ করেন, ‘একটি মহল নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করছে।’ অন্যদিকে জামায়াতের আমির বলেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপসহীন লড়াই অব্যাহত থাকবে, কিন্তু গণভোটের মাধ্যমে জনগণের মতামত নেওয়াই এখন সময়ের দাবি।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জাতীয় রাজনীতিতে বিএনপি ও জামায়াতের এই ভিন্নমত আসন্ন নির্বাচনে জোট রাজনীতির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে নতুন প্রশ্ন তুলেছে। দুই দলের এই বিপরীত অবস্থান আগামী দিনের রাজনৈতিক সমীকরণে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে আসন্ন নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি বিরোধী জোটের অভিন্ন অবস্থান প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।