চট্টগ্রাম নগরে যানজট নিরসন ও আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে মনোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) রেস্টহাউস প্রাঙ্গণে গতকাল শুক্রবার সম্ভাব্যতা যাচাই বিষয়ক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এতে উপস্থিত ছিলেন বৃহত্তর চট্টগ্রাম ইকোনমিক ফোরামের প্রেসিডেন্ট আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী, মনোরেল প্রকল্পের চিফ কো-অর্ডিনেটর ফয়সাল রহমান, আরব কন্ট্রাক্টরস ও ওরাসকম কন্সট্রাকশন কোম্পানির কান্ট্রি ডিরেক্টর কাউসার আহমেদ চৌধুরী, প্রকল্প পরামর্শক কামরান আনোয়ার নাগিভ এবং চসিক প্রকৌশলী ও প্রকল্পের সমন্বয়ক আবু সাদাত মো. তৈয়ব।
সভায় জানানো হয়, প্রাথমিকভাবে চারটি সম্ভাব্য রুটে মনোরেল চালুর জন্য যাচাই চলছে— ক. কালুরঘাট থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত (বহদ্দারহাট, চকবাজার, লালখান বাজার, দেওয়ানহাট ও পতেঙ্গা হয়ে) ২৬.৫ কিলোমিটার। খ. সিটি গেট থেকে শহীদ বশিরুজ্জামান চত্বর পর্যন্ত (এ কে খান, নিমতলী, সদরঘাট ও ফিরিঙ্গি বাজার হয়ে) ১৩.৫ কিলোমিটার। গ. অক্সিজেন থেকে ফিরিঙ্গি বাজার পর্যন্ত (মুরাদপুর, পাঁচলাইশ, আন্দরকিল্লা ও কোতোয়ালি হয়ে) ১৪.৫ কিলোমিটার এবং ঘ. সিটি গেট থেকে আগ্রাবাদ এক্সেস হয়ে নিমতলা পর্যন্ত ১০.৯ কিলোমিটার।
প্রকল্প বাস্তবায়নে ওরাসকম কন্সট্রাকশন পিপিপি (Public-Private Partnership) ভিত্তিতে কাজ করবে। প্রতিষ্ঠানটি যাত্রীপ্রতি ন্যূনতম ৫ টাকা হারে সিটি কর্পোরেশনকে মুনাফা প্রদান করবে। প্রকল্পের আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা। প্রাথমিকভাবে প্রতিষ্ঠানটি ২০–২৫ বছর পরিচালনার পর চসিককে হস্তান্তর করবে।
ফিজিবিলিটি স্টাডি সম্পন্ন হতে সময় লাগবে প্রায় ৭–৮ মাস, এবং নির্মাণকাজ শেষ করতে সময় লাগবে ৩–৪ বছর। মনোরেল পরিচালনায় প্রতিদিন প্রয়োজন হবে ৩০–৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।
চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘চট্টগ্রামের জনসংখ্যা ও যানজট বিবেচনায় আধুনিক গণপরিবহন এখন সময়ের দাবি। মনোরেল প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নগরবাসী পাবেন নিরাপদ, সময়নিষ্ঠ ও আরামদায়ক যাতায়াতের সুযোগ। এতে কর্মঘণ্টা বাঁচবে, যানজট কমবে এবং নগর অর্থনীতি হবে আরও গতিশীল।’
তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রামকে একটি স্মার্ট ও পরিবেশবান্ধব শহরে রূপান্তরে সিটি কর্পোরেশন প্রকল্প বাস্তবায়নে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে।’