বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম অঞ্চল টিম সদস্য অধ্যাপক নুরুল আমীন চৌধুরী বলেছেন, ‘ইতোপূর্বে জামায়াতের ৫ দফা দাবি নিয়ে যে গণসংযোগ কর্মসূচি পরিচালিত হয়েছে, তাতে জনগণের ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। এই দাবিগুলো এখন জনগণের নিজস্ব দাবিতে পরিণত হয়েছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য ৫ দফা আদায়ের বিকল্প নেই। এ গণদাবি বাস্তবায়িত হলে ফ্যাসিবাদ চিরতরে নির্মূল হবে, ইনশাআল্লাহ।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অতীত নির্বাচনে জামায়াতই কেয়ারটেকার ফর্মুলা দিয়েছে। এবার যে ফর্মুলা উপস্থাপন করা হয়েছে, তা বাস্তবায়িত হলে ভবিষ্যতে আর কোনো দল ফ্যাসিবাদী রূপ নিতে পারবে না।’
বুধবার (৮ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় কর্ণফুলীর ক্রসিংস্থ এস.আর. স্কয়ার কনভেনশন হলে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জামায়াতের উদ্যোগে সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের নিয়ে এক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা আমীর আনোয়ারুল আলম চৌধুরী, সঞ্চালনায় ছিলেন জেলা সহ-সচিব ও প্রচার-মিডিয়া বিভাগের সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু নাছের।
বৈঠকে বক্তব্য রাখেন জেলা সহ-সচিব মুহাম্মদ জাকারিয়া, চট্টগ্রাম-১৬ আসনের মনোনীত এমপি প্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা জহিরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম-১৩ আসনের মনোনীত এমপি প্রার্থী ও জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক মাহমুদুল হাছান চৌধুরী, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা ইসমাইল হক্কানী, ইঞ্জিনিয়ার শহীদুল মোস্তফা, কর্ণফুলী উপজেলা আমীর মনির আবছার চৌধুরী, আনোয়ারা উপজেলা সেক্রেটারি আবুল হাসান খোকা এবং মিডিয়া সংগঠক গিয়াস আজাদ চৌধুরী।
বৈঠকে উপস্থিত সাংবাদিকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন তৌহিদুল আলম (জি-টিভি), নুরুল ইসলাম (দৈনিক আজাদী), আনোয়ারুল হক (যায়যায়দিন), মোরশেদ আলম (প্রথম আলো), জাহেদুল ইসলাম (দেশ রূপান্তর), এনামুল হক নাবিদ (সময়-এর আলো), বদরুল হক (যুগান্তর), আকরাম হোসেন রানা (সমকাল), মুহাম্মদ আয়াজ (পূর্বদেশ) এবং মহিউদ্দিন মঞ্জুর (সকালের সময়)।
সাংবাদিকরা বলেন, ‘জামায়াতের উত্থাপিত দাবিগুলো যৌক্তিক। তবে এর ব্যাপক প্রচার ও জনমত গঠনের জন্য প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এই বার্তা পৌঁছে দিতে হবে। সরকার যেন সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে নিয়ে সমাধান বের করে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত না হলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হয়।’
জামায়াত নেতারা বলেন, ‘আমরা ইনসাফভিত্তিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজিমুক্ত দেশ গঠন এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। ফ্যাসিস্ট শক্তির বিচার সম্পন্ন না করে নির্বাচন দেওয়া হলে গণতন্ত্র ও বিচার প্রক্রিয়া থমকে যাবে।’
তাঁরা আরও পাঁচ দফা দাবির কথা উল্লেখ করেন— ক. জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী সংসদ নির্বাচন দিতে হবে, খ. পিআর (Proportional Representation) পদ্ধতির ভোট চালু করতে হবে, গ. লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে, ঘ. ফ্যাসিস্ট সরকারের গণহত্যার বিচার সম্পন্ন করতে হবে, ঙ. আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল নিষিদ্ধ করতে হবে।
নেতারা সতর্ক করে বলেন, ‘সরকার দ্রুত সমাধান না দিলে আন্দোলন আরও তীব্র হবে, এবং জনগণকে সঙ্গে নিয়েই ৫ দফা বাস্তবায়ন করা হবে, ইনশাআল্লাহ।’
সভাপতির বক্তব্যে জেলা আমীর আনোয়ারুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা জনগণের কাছে যাচ্ছি, জনমত গঠন করছি। জনগণ আমাদের সঙ্গে ঐক্যমত পোষণ করছে। গণআন্দোলনের মাধ্যমেই ৫ দফা দাবি আদায় করা হবে, ইনশাআল্লাহ।’
বৈঠকে আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলার বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত অর্ধশতাধিক সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মী উপস্থিত ছিলেন।