চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২২ জন প্রার্থী। তবে শিক্ষার্থীদের আড্ডায়, ক্যাম্পাসের করিডোরে এবং সামাজিক মাধ্যমে বেশি আলোচনায় তিনজন— ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলের মো. শাফায়েত হোসেন, ছাত্রশিবিরের সাঈদ বিন হাবিব এবং স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন প্যানেলের রশিদ দিনার।
এক গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপে তারা তুলে ধরেছেন নিজেদের ভাবনা, পরিকল্পনা ও চ্যালেঞ্জের কথাগুলো। তিনজনের বক্তব্যেই মিলেছে অভিন্ন সুর— ‘শিক্ষার্থীদের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠতে চাই।’
শাফায়েত হোসেন
স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের পরিচিত মুখ শাফায়েত হোসেন ফিজিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের ভোট চাই ব্যক্তিগত স্বার্থে নয়, বরং তাদের অধিকার আদায়ে। সহাবস্থান, সেশনজটমুক্ত ও হয়রানিমুক্ত ক্যাম্পাস গড়তে কাজ করব।’
তার অঙ্গীকার— খাবার, আবাসন, পরিবহণ এবং শিক্ষার্থীদের মৌলিক চাহিদা পূরণে কার্যকর পদক্ষেপ। তবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে তিনি দেখছেন সুষ্ঠু ও ভয়মুক্ত ভোটের পরিবেশ নিশ্চিত করা।
সাঈদ বিন হাবিব
ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ও চবি শাখা ছাত্রশিবিরের সাহিত্য ও মানবাধিকার সম্পাদক সাঈদ বিন হাবিব বলেন, ‘আমাদের প্যানেলে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। বৈচিত্র্যময় চবি ক্যাম্পাসের বাস্তবতাকে গুরুত্ব দিয়েছি।’
তিনি জোর দেন আবাসন ও যাতায়াত সমস্যার সমাধানে। একই সঙ্গে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য মেডিসিন কর্নার, মাতৃত্বকালীন ছুটি, স্যানিটারি ন্যাপকিন সরবরাহ, ‘ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার’ স্থাপনসহ নানা পরিকল্পনার কথা জানান। এছাড়া চবি মেডিকেল সেন্টারকে ন্যূনতম ২০ শয্যা হাসপাতালে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি।
চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে সাঈদ মনে করেন, ‘ভোটের মাঠে সমান সুযোগ নিশ্চিত করা জরুরি। ভোট গণনার ফলাফল বুথে বুথে এলইডি স্ক্রিনে প্রদর্শন চাই। পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনও প্রয়োজন।’
রশিদ দিনার
জুলাই অভ্যুত্থানের সক্রিয় অংশগ্রহণকারী রশিদ দিনার ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় সংগঠকের পদ থেকে বহিষ্কৃত হয়ে এবার স্বতন্ত্রভাবে লড়ছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা যেহেতু কারও লেজুড়বৃত্তিক সংগঠন নই, তাই শিক্ষার্থীদের জন্য দ্বিধাহীনভাবে কাজ করতে পারব।’
তার অগ্রাধিকার— আবাসন সংকট নিরসন, ট্রেন ও বাস সার্ভিস সম্প্রসারণ, গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং খাবারের মানোন্নয়ন। তবে নির্বাচনে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন কমিশনের নিরপেক্ষতা এবং কিছু প্যানেলের অস্বাভাবিক মিডিয়া হাইপকে।