বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আসন্ন নির্বাচনে ক্লাব ক্যাটাগরিতে ১২ পরিচালক পদে মনোনয়ন ঘিরে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। ক্যাটাগরি ১, ২ ও ৩— সব জায়গায় সরকার সমর্থিত একটি গোষ্ঠীর প্রচ্ছন্ন প্রভাব কাজ করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ক্লাব ক্রিকেট সংগঠক ইসরাফিল খসরু। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি এক্সিউম ক্রিকেটার্স থেকে তোলা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। সূত্র থেকে প্রাপ্ত শেষ খবর, ক্যাটাগরি ১, ২ ও ৩ মিলিয়ে ১৫ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা হয়েছে। এই তালিকা বড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এক্সিউম ক্রিকেটার্সের এ ক্লাব সংগঠক তাঁর পরিচালক পদে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রথম দিন থেকেই নির্বাচনের প্রতিটি প্রক্রিয়ায় কোনো স্বচ্ছতা নেই। সরকারের একটি বিশেষ গোষ্ঠী বিভিন্নভাবে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে। জেলা, বিভাগ থেকে ক্লাব— সব জায়গায় একই অবস্থা। একবার ১৫ ক্লাবকে বাতিল করা হলো, আবার পরের মুহূর্তে বৈধ ঘোষণা করা হলো। পরে আবার কোর্টে গেল তা বাতিল করতে। এখন এটা পরিষ্কার; পুরো সরকার নয়, সরকারের ভেতরে একটি অংশ এভাবে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করেছে।’
নির্বাচনে নিজেদের অবস্থান নিয়ে ইসরাফিল খসরু জানান, তাঁদের অবস্থান নৈতিক ছিল। কিন্তু পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকায় আমরা সিদ্ধান্ত পাল্টেছি। তিনি বলেন, ‘আমরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছি, কারণ এই নির্বাচনে কোনো পরিবেশ নেই। বিসিবির মতো জায়গায় এভাবে নির্বাচন হতে পারে না। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ১৮ কোটি মানুষের, এখানে ‘ম্যানুফ্যাকচারড ইলেকশন’ আমরা দেখতে চাই না। শিগগিরই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে আমরা আমাদের অবস্থান জানাব।’
ইসরাফিল খসরুর অভিযোগ, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে কাউন্সিলর বাছাইয়ের সময় ডিসিদের প্রভাবিত করা হয়েছে, ‘আমরা শুনেছি ডিসিদের ফোন করে চাপ দেওয়া হয়েছে। যেভাবে হঠাৎ ১৫ ক্লাবের বৈধতা বদলে ফেলা হলো, সেটা আসলে এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা। এভাবে একটা স্বচ্ছ নির্বাচন সম্ভব নয়।’
মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন আরও কয়েকজন প্রার্থী। তাঁদের মধ্যে আছেন বিসিবির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাবু। তবে তিনি কিছুটা ভিন্ন মত পোষণ করে বলেন, ‘এখান থেকে উত্তরণের পথও আছে। চাইলে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া যায়, অথবা অ্যাডহক কমিটি করা যায়। না হলে বিদ্যমান কমিটির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো যেতে পারে। এ নিয়ে ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গেও আলাপ হয়েছে, কীভাবে নির্বাচনটা সুন্দরভাবে করা যায় সেটাই আলোচনার মূল বিষয়।’
সব মিলিয়ে বিসিবি নির্বাচনকে ঘিরে অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা আরও ঘনীভূত হচ্ছে। একদিকে প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার, অন্যদিকে আদালতের রায় ও রাজনৈতিক প্রভাবের অভিযোগ— সব মিলে এ নির্বাচন ক্রমেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠছে।