চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে পাহাড়ে হারিয়ে যাওয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাত শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার সকালে ডাকভাঙা পাহাড় এলাকা থেকে তাদের সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে শিশুদের উদ্ধারে অংশ নেওয়া পুলিশ সদস্যদের পুরস্কৃত করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে বাঁশখালী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির সাত শিক্ষার্থী বাড়ি থেকে বের হয়। নির্ধারিত সময়ে তারা বাড়ি না ফেরায় উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা পুলিশের সহায়তা চান।
নিখোঁজ শিক্ষার্থীরা হলো— আবরার উদ্দীন ইশরাক (১১), মাহাতাফ মঞ্জুর চৌধুরী (১১), কৃতশিক দাশ স্বপ্নীল (১২), মোহাম্মদ জিনান (১১), মোহাম্মদ বিন মাহমুদ (১১), আকতার (১২) ও মো. সাইদ (১২)।
অভিযোগ পাওয়ার পর চট্টগ্রামের পুলিশ সুপারের নির্দেশে বাঁশখালী থানা পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তল্লাশি অভিযান শুরু করে। ফুটেজে দেখা যায়, শিশুরা মিয়ার বাজার থেকে ইজিবাইকে উত্তর দিকে যায়। এরপর আর দেখা না যাওয়ায় ধারণা করা হয়, তারা পাহাড়ি এলাকায় প্রবেশ করেছে।
বাঁশখালী থানার ওসি সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ ছয়টি দলে ভাগ হয়ে পাহাড়ি এলাকা, জঙ্গল ও দুর্গম পথে তল্লাশি চালায়। এ অভিযানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, এলাকাবাসী ও অভিভাবকেরাও অংশ নেন। শেষ পর্যন্ত শনিবার সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে ডাকভাঙা পাহাড় থেকে সাত শিশু সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার হয়।
এ ঘটনায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে শিক্ষক ও অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, শিশুদের একা দুর্গম এলাকা বা পাহাড়ে যাওয়া থেকে বিরত রাখতে হবে। বিদ্যালয় শেষে নিরাপদে বাড়ি ফেরার বিষয়েও অভিভাবকদের সচেতন থাকতে হবে। পাশাপাশি শিশুদের মোবাইল ফোন বা পরিচয়পত্র বহনে উৎসাহিত করা, অচেনা ব্যক্তি বা যানবাহনের সঙ্গে যাতায়াত এড়িয়ে চলা এবং নিরাপত্তা বিষয়ে নিয়মিত আলোচনায় অভ্যস্ত করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম সানতু বলেন, ‘শিশুদের নিরাপত্তা আমাদের সবার সম্মিলিত দায়িত্ব। বাঁশখালী থানা পুলিশ রাতভর অভিযান চালিয়ে শিশুদের উদ্ধার করেছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে অভিভাবক ও শিক্ষকদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।’
