চট্টগ্রাম নগরীর অন্যতম ব্যস্ততম মোড় লালখান বাজার। নগরের প্রধান সড়কগুলোর সংযোগস্থল হওয়ায় প্রতিনিয়ত হাজারো মানুষ এই মোড় পার হন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এখানে ফুটওভার ব্রিজ না থাকায় সড়ক পারাপার ছিল মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন পথচারীরা। অবশেষে পথচারীদের সেই দীর্ঘদিনের দাবি পূরণের পথে এগোলো চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। শুরু হয়েছে নান্দনিক ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণকাজ।
গত বৃহস্পতিবার থেকে এ কাজ শুরু হয়েছে বলে জানান সিডিএ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম বলেন, ‘নগরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল লালখান বাজারে একটি নিরাপদ ফুটওভার ব্রিজ। আমরা সেটি নান্দনিক নকশায় নির্মাণ করছি। তিনটি স্থান থেকে ওঠানামার সুবিধা রাখা হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই কাজ শেষ হবে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্প প্রকল্পের টাকা থেকেই এর ব্যয়ভার বহন করা হচ্ছে।’
তিনি আরও জানান, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে ডিজাইন ও স্থান নির্বাচন করা হয়েছে। কাজের প্রতিটি ধাপে চসিক মেয়র ব্যক্তিগতভাবে সহযোগিতা করছেন।
ফুটওভার ব্রিজটি মূল অংশ লম্বায় ৩৯ দশমিক ৪২ মিটার। উচ্চতায় প্রায় ৬ দশমিক ১ মিটার এবং চওড়ায় প্রায় ২ দশমিক ৫ মিটার বিস্তৃত হবে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে স্থান নির্বাচন, ডিজাইন ইত্যাদি সমন্বয় করে কাজটি সম্পাদন করছে সিডিএ।
লালখান বাজার মোড়ে প্রতিদিন অফিসগামী পথচারী রুবিনা আক্তার বলেন, ‘এখানে রাস্তা পার হতে গিয়ে একবার দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলাম। তাই প্রতিদিন ভয় নিয়ে হাঁটতে হতো। ফুটওভার ব্রিজ হলে আমাদের জন্য অনেক স্বস্তি হবে।’
চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্র আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘এই মোড়ে যানবাহনের চাপ সবসময় থাকে। মাঝে মাঝেই দুর্ঘটনা দেখি। ফুটওভার ব্রিজ হলে আমরা শিক্ষার্থীরাও নিরাপদে আসা-যাওয়া করতে পারব।’
এলাকার ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের দোকানের সামনে বহু দুর্ঘটনা ঘটতে দেখেছি। ব্রিজ হলে পথচারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে এবং যানজটও কিছুটা কমবে।’
নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, এ ধরনের নান্দনিক ফুটওভার ব্রিজ শুধু পথচারীদের নিরাপত্তাই নিশ্চিত করবে না, বরং নগরের সৌন্দর্যও বাড়াবে। চট্টগ্রামের অন্যান্য ব্যস্ত মোড়েও একই উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন নগরবাসী।
আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হলে লালখান বাজার মোড়ের দীর্ঘদিনের ঝুঁকি কমে যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।