দীর্ঘদিন আলোচনার পরও জুলাই সনদের বাস্তবায়ন নিয়ে একমত হতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলো। বিএনপি জুলাই সনদের সাংবিধানিক বিষয়গুলো পরবর্তী জাতীয় সংসদের মাধ্যমে সমাধানের পক্ষে। অন্যদিকে জামায়াত, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলনসহ কয়েকটি দল জুলাই সনদের আইনি রূপ দিয়ে তার ভিত্তিতেই জাতীয় নির্বাচন চায়। এ ছাড়া সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি, জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করাসহ বেশ কিছু বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে মতানৈক্য কাটেনি দলগুলোর। এ অবস্থায় দাবি আদায়ে তিন দিনের কর্মসূচি দিয়েছে জামায়াতসহ তিনটি ইসলামি দল। এর মধ্য দিয়ে আলোচনার টেবিল থেকে রাজপথে গড়াচ্ছে রাজনীতি, বাড়ছে উদ্বেগ ও শঙ্কা।
দলগুলোর মাঠের কর্মসূচির কারণে দেশের রাজনীতিতে নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। তাঁরা বলছেন, এখন বিএনপি যদি পাল্টা কর্মসূচি দেয়, তাহলে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আবার অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে। দেখা দিতে পারে সংঘাত।
রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত মার্চ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করে আসছে। প্রথম ধাপে দলগুলোর সঙ্গে আলাদা করে বসেছিল কমিশন। এরপর দ্বিতীয় ধাপে ৩০টি দল ও জোট নিয়ে ২৩ দিন সংলাপ হয়। দুই ধাপের সংলাপে ৮৪টি বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য হয়, যার ভিত্তিতে জুলাই জাতীয় সনদ তৈরি করেছে কমিশন। কিন্তু বাস্তবায়ন পদ্ধতি ঠিক না হওয়ায় ঝুলে রয়েছে সনদে স্বাক্ষর। বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক একাধিক বৈঠক হলেও সমাধান আসেনি। এ অবস্থায় গতকাল সোমবার জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন, জাতীয় নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি চালু, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা, ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতন ও দুর্নীতির বিচার এবং জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবিতে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন। অভিন্ন এই পাঁচ দাবির সঙ্গে আরও একটি দাবি যোগ করে যুগপৎ কর্মসূচি দিয়েছে খেলাফত মজলিস। নেজামে ইসলামীও একই দাবিতে কর্মসূচি দেবে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া পিআর বাদে বাকি চার দাবিতে এনসিপি, এবি পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদ পৃথক কর্মসূচি দিয়ে মাঠে নামবে বলে জানা গেছে।