মাঠ প্রশাসনের সহকারীদের বেতন ও পদোন্নতিতে দীর্ঘদিনের বৈষম্য নিরসনের জোরালো দাবি উঠেছে বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতির (বাকাসস) কেন্দ্রীয় সম্মেলনে। শুক্রবার চট্টগ্রামে আয়োজিত এ সম্মেলনে ৪৭ জেলার প্রায় ২৯০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন।
সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন বাকাসস কেন্দ্রীয় এডহক কমিটির আহ্বায়ক এস.এ. আরিফ হোসেন এবং সঞ্চালনা করেন চট্টগ্রাম জেলা সহ-সভাপতি নূরুল মুহাম্মদ কাদের। স্বাগত বক্তব্যে জেলা সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন বলেন, “মাঠ প্রশাসনের সহকারীরা প্রশাসনের চালিকাশক্তি, অথচ তারা বছরের পর বছর অবহেলিত।”
প্রধান অতিথি ফরিদা খানম বলেন, ‘সূর্যের আলো নিয়ে চাঁদ আলো দেয়, তেমনি জেলা প্রশাসনের সহকারীরা সূর্যের মতো কাজ করেন বলেই আমরা জনগণের সেবায় কাজ করতে পারি। অথচ তাদের কাজের পরিধি অনুযায়ী পদোন্নতি হয় না।’
তিনি বৈষম্য নিরসনের দাবির বাস্তবায়নে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
বক্তারা অভিযোগ করেন, একই ধরনের কাজ করেও সহকারীদের পদবিন্যাস, বেতন কাঠামো ও পদোন্নতিতে অবিচার করা হচ্ছে। কেউ কেউ ২৫–৩০ বছর চাকরি করেও পদোন্নতির সুযোগ পাননি।
২০১৯ সাল থেকে বৈষম্য নিরসনে আন্দোলন চালাচ্ছে বাকাসস। ২০২১ সালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মাঠ প্রশাসনের আটটি পদ একীভূত করে ‘সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা’ পদ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয়ের আপত্তিতে তা স্থগিত হয়, ফলে নতুন বিভেদ সৃষ্টি হয়।
সম্মেলনে তিন দফা দাবি উত্থাপন করা হয়— আটটি পদ একীভূত করে ‘সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা’ পদে রূপান্তর, ২০১০ সালের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী অফিস সহকারী-কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিককে পুনরায় ‘কম্পিউটার অপারেটর’ পদে রূপান্তর এবং পদোন্নতিতে জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণে সমতা নিশ্চিতকরণ।
সম্মেলনে এস.এ. আরিফ হোসেনকে সভাপতি এবং ঢাকা জেলার মোহাম্মদ আশ্রাফুল ইসলামকে মহাসচিব নির্বাচিত করা হয়। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হবে।
সম্মেলন থেকে বলা হয়, মাঠ প্রশাসনের সহকারীরা এবার আশাবাদী— তাদের ন্যায্য কণ্ঠ রাষ্ট্র শুনবে এবং প্রশাসনিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।