চট্টগ্রামের সাবেক তিন মন্ত্রী, পাঁচজন সংসদ সদস্য ও আলোচিত ভূমিমন্ত্রীর সাবেক এপিএস সায়েমসহ ২২৫ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় অজ্ঞাত পরিচয়ে আরও ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে সিএমপির ডবলমুরিং মডেল থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন নোয়াখালী জেলার সেনবাগ থানার মধ্যম নলুয়ার মোহাম্মদ আবদুল ছোবাহানের ছেলে মো. জামাল উদ্দিন (৫৩)।
বর্তমানে যিনি নগরীর কোতোয়ালি থানাধীন দামপাড়া ব্যাটারি গলিতে বসবাস করেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডবলমুরিং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মো. রফিক আহমেদ। যার থানা মামলা নং–১৫/১৮২। মামলাটি তদন্ত করবেন সংশ্লিষ্ট থানার এসআই ইয়াছির আরাফাত। মামলার অপরাধ বিবরণীতে ধারা উল্লেখ করা হয়–পেনাল কোডের ১৪৩/ ১৪৭/ ১৪৯/ ১৪৯/ ৩০২/১০৯/৩৪।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেন। এমন খবরে শহরে হঠাৎ আনন্দ মিছিল বের হয়। বিপরীতে কিছু দুষ্কৃতকারী দেশী বিদেশী অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় হামলা, ভাঙচুর, গুলি ও অগ্নিসংযোগ করে।
ওইদিনেই ভিকটিম মোহাম্মদ আলম (৩৬) ডবলমুরিং থানাধীন মনছুরাবাদ পুলিশ লাইনের সামনে মসজিদে নামাজ আদায় করতে যান।
মসজিদ থেকে নামাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে হঠাৎ দুষ্কৃতিকারীদের ছোঁড়া গুলি লাগে ভিকটিমের মাথায়। পরে গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তার উপর পড়ে থাকে মো. আলম। পরে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে ভিকটিমকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মা ও শিশু ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা ভিকটিমকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মামলায় অন্যান্য আসামিরা হলেন—সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিষ্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক বন ও পরিবেশ মন্ত্রী আনিসুল হক মাহমুদ, চট্টগ্রাম–১০ (ডবলমুরিং–পাঁচলাইশ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চু, চট্টগ্রাম–১১ (বন্দর–পতেঙ্গা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এমএ লতিফ, চট্টগ্রাম–৪ (সীতাকুণ্ড) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. দিদারুল আলম দিদার, চট্টগ্রাম–১৫ (লোহাগাড়া–সাতকানিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী, চট্টগ্রাম ৪–সীতাকুণ্ড আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মাহবুবুল আলম, চসিকের সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, জাতীয় পার্টির চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি সোলেমান আলম শেঠ, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এমএ সালাম, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক উপ–অর্থ সম্পাদক হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর, সাবেক কাউন্সিলর ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক কাউন্সিলর মোবারক, সাবেক কাউন্সিলর তৌফিক আহম্মদ চৌধুরী, সাবেক কাউন্সিলর জাফর আলম চৌধুরী, সাবেক কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, সাবেক কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, সাবেক কাউন্সিলর আব্দুর সবুর লিটন, সাবেক কাউন্সিলর পুলক খাস্তগীর, সাবেক কাউন্সিলর আবুল হাসনাত মোহাম্মদ বেলাল, সাবেক কাউন্সিলর এসরারুল হক, সাবেক কাউন্সিলর জহুর লাল হাজারী, ভূমিমন্ত্রীর সাবেক এপিএস রিদুয়ানুল করিম চৌধুরী সায়েম, দিদারুল আলম মাসুম, দেবাশীষ নাথ দেবু, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদ, আরশাদুল আলম বাচ্চু, নুরুল আজিম রনিসহ ২২৫ জন।
এ প্রসঙ্গে ডবলমুরিং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মো. রফিক আহমেদ বলেন, ‘মামলাটি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’